চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা ও ১৩ পৌরসভার জন্য দুই কোটি ৬৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা ছাড় করেছে মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে উপজেলার জন্য এক কোটি ৯৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে থোক বরাদ্দ হিসেবে ছাড় করা হয়। বাকি ৭৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা পৌরসভাগুলো অনুদান হিসেবে পেয়েছে। পৌরসভার জন্য ছাড়কৃত অর্থের মধ্যে ৫৯ লাখ ৮ হাজার টাকা মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বাস্তবায়নে এবং ১৩ লাখ ৫ হাজার টাকা করোনা মোকাবেলায় ব্যয় হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অর্থ বণ্টনের ক্ষেত্রে পৌরসভাগুলোকে ‘ক’ ও ‘খ’ দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে ‘ক’ শ্রেণিতে ৮টি পৌরসভা রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- পটিয়া, বারৈয়ারহাট, সীতাকুণ্ড, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, হাটহাজারী ও রাউজান। ‘খ’ শ্রেণিতে ৫টি পৌরসভা রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- মিরসরাই, রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি ও বোয়ালখালী।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরের (২০২০-২০২১) বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটে দেশের পৌরসভাসমূহের জন্য ‘ডেঙ্গু মশক নিধন, পরিচ্ছন্নতা ও প্রচার’ উপ-খাতে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। এর মধ্যে গত মাসে প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ সারাদেশের ৩২২টি পৌরসভার জন্য ১৪ কোটি ৭৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা ছাড় করা হয়। ছাড়কৃত অর্থের মধ্যে চট্টগ্রামের ‘ক’ শ্রেণির ৮টি পৌরসভার প্রতিটির জন্য ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা করে ৩৯ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং ‘খ’ শ্রেণির ৫টি পৌরসভার জন্য ৪ লাখ ১২ হাজার টাকা করে ২০ লাখ ৬০ হাজার টাকা পেয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব ফারজানা মান্নান জানান, সংশ্লিষ্ট পৌরসভার মেয়র অথবা প্রশাসক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা সচিবগণ যৌথভাবে এ মঞ্জুরিকৃত অর্থের আয় ও ব্যয় কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। এ অর্থ পৌরসভার মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা ব্যতীত অন্য কোন কাজে ব্যয় করা যাবে না। ছাড়কৃত অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে পিপিআর-২০০৮ (সর্বশেষ সংশোধনীসহ) অনুসরণসহ যাবতীয় আর্থিক বিধি-বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে।
এদিকে চলতি অর্থ বছরের বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের ‘কোভিড-১৯ মোকাবেলা’ উপ-খাতে দেশের ৩২৮ পৌরসভার জন্য ১৪ কোটি বরাদ্দ আছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ গত মাসে ৩ কোটি ৪৯ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ছাড় করা হয়। ছাড়কৃত অর্থের মধ্যে চট্টগ্রামের ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভাগুলো এক লাখ ৫ হাজার টাকা করে ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ‘খ’ শ্রেণির পৌরসভাগুলো এক লাখ দুই হাজার টাকা করে পেয়েছে।
করোনা মোকাবেলায় পাওয়া অর্থ দিয়ে পৌর এলাকার হাট-বাজার, বাস স্টেশন, রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ, সাধারণ জনগণ ও ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে না বলে সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব ফারজানা মান্নান।
উপজেলা : চলতি অর্থ বছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে উপজেলাসমূহের উন্নয়ন সহায়তা থোক বরাদ্দ আছে ৬৫০ কোটি টাকা । এরমধ্যে গত ২৪ নভেম্বর সাধারণ বরাদ্দের দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ গত ২৪ নভেম্বর দেশের ৪৮৮ উপজেলার অনুকূলে ৬৫ কোটি ২৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ছাড় করা হয়।
এবিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা-২ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ সামছুল হক একই বিভাগের চিফ একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসারকে দেয়া অর্থ মঞ্জুরি প্রদানপত্রে বলেন, উপজেলা পরিষদ উন্নয়ন তহবিল ব্যবহার নির্দেশিকা অনুসরণে উপজেলা পর্যায়ে উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার যৌথভাবে মঞ্জুরিকৃত অর্থের আয় ও ব্যয় কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। মঞ্জুরিকৃত অর্থের অব্যয়িত অংশ ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা করতে হবে এবং ব্যয় বিবরণী প্রদান করতে হবে আগামী বছরের ২১ জুলাইয়ের মধ্যে।
জানা গেছে, উপজেলাগুলোর মধ্যে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার জন্য ১৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা, আনোয়ারা উপজেলার জন্য ৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, বাঁশখালী উপজেলার জন্য ১৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা, বোয়ালখালী উপজেলার জন্য ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, চন্দনাইশ উপজেলার জন্য ৯ লাখ ৪৯ হাজার টাকা, ফটিকছড়ি উপজেলার জন্য ১৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা, হাটহাজারী উপজেলার জন্য ১৩ লাখ ৫২ হাজার টাকা, লোহাগড়া উপজেলার জন্য ১১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা, মিরসরাই উপজেলার জন্য ১৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা, পটিয়া উপজেলার জন্য ১৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জন্য ১৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা, রাউজান উপজেলার জন্য ১২ লাখ ৬৬ হাজার টাকা, সন্দ্বীপ উপজেলার জন্য ১৬ লাখ ৮৯ হাজার টাকা, সাতকানিয়া উপজেলার জন্য ১৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং সীতাকুণ্ড উপজেলার জন্য ১৩ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ছাড় করা হয়েছে।