বাংলাদেশ (এবি) পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ধর্ম এবং মুক্তিযুদ্ধ আমাদের সম্মান এবং মর্যাদার বিষয়। এটাকে আমরা বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখবো। আমাদের রাজনীতির ভিত্তি হবে নাগরিক অধিকার। আমরা রাষ্ট্রটিকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই। এবি পার্টির রাজনীতি হচ্ছে সেবা ও সমস্যা সমাধানের রাজনীতি। যেটা আমরা ইউরোপে দেখে এসেছি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে ‘চট্টগ্রামের উন্নয়নে এবি পার্টির পাঁচ প্রস্তাব’ শীর্ষক মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রামের উন্নয়নে অনুষ্ঠানে এবি পার্টির পক্ষ থেকে পাঁচটি প্রস্তাব দেওয়া হয়, যার মধ্যে আছে– নগর সরকার ও স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরকারি কোষাগারে জমা হওয়া মুনাফার ন্যূনতম ৩০ শতাংশ চট্টগ্রামের উন্নয়নে ব্যয় করা, কর্ণফুলী নদী ও খালগুলোর যুগোপযোগী সংস্কার এবং নগরীর সমপ্রসারণ প্রকল্প গ্রহণ, চট্টগ্রাম নগরীকে ‘ট্রেড কানেকটিভিটি হাব’ হিসেবে প্রস্তুত করা ও পরিবেশ বিপর্যয় রোধে পাহাড় পুনরূদ্ধার করা।
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, রাষ্ট্র উন্নয়নের মডেল একটা লুটপাটের মডেল দিয়ে তৈরি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনাদের যে বিশাল ফ্লাইওভার (এলিভেটডের এক্সপ্রেসওয়ে)। এটার ওপর দিয়ে আসার সময় একটা এক্সিট দেখলাম না। এত বড় ফ্লাইওভারে মিনিমাম ১০টা এক্সিট দেওয়ার কথা ছিল। চট্টগ্রামের লোকেরা বলে একজন ব্যক্তির জন্য টানেল করা হয়েছে যেন সে বাড়ি থেকে এয়ারপোর্টে যেতে পারে। আরেকজন ব্যক্তির জন্য ফ্লাইওভার করা হয়েছে তার বাসা থেকে যেন এয়ারপোর্টে যেত পারে। একটা রাষ্ট্র তার উন্নয়নের মডেল তৈরি করেছে একটা লুটপাটের মডেল দিয়ে। তাহলে কিভাবে এটা স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের সাথে যায়? কারণ কথা ছিল রিপাবলিক করার। রাষ্ট্রের প্রত্যেকটা টাকা–পয়সা যে আপনি খরচ করবেন এটা মানুষের জন্য হতে হবে।
সিডিএ’র প্ল্যান কোথায় প্রশ্ন রেখে এবি পার্টির এ নেতা বলেন, ‘সিডিএ নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হচ্ছে দেখি। আগে চট্টগ্রামে বন্যা তো দেখিনি। সেই চট্টগ্রামে এখন প্রতিবছর অসম্ভব রকমের ঘাপলা মারা বন্যা হয়। এমনকি আপনাদের সাবেক মেয়রের বাসার নিচতলা নাকি ডুবে গেছে। তাহলে আপনি কি প্ল্যান করলেন? বন্যা হচ্ছে কেন? আপনাদের এখানে ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে শুধুমাত্র দিন–তারিখ কারেকশন করতে গিয়ে ১০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়ে গেছে। এসব প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর মধ্য দিয়ে এই টাকাগুলো খেয়ে ফেলেছে। তাহলে সিডিএ’র প্ল্যান কোথায়? এখানে তো উন্নয়ন নয়, শুধু ভোগান্তি দেখতে পাচ্ছি। কারণ আমি যে রিপাবলিক মডেলের রাষ্ট্র করতে চেয়েছিলাম এটার সাথে যায় না। যে উন্নয়ন প্রকল্প করলে মাসের পর মাস মানুষ পানিবন্দি হয়ে থাকে সেই প্রকল্পে কোনো ইনসাফ নাই।
প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ের আগুন নাশকতা কি না তা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি বলেছেন, আগুন লাগছে, নাহিদ আর আসিফের রুম পুড়ে গেল। এর আগে সজীব ওয়াজেদ জয় বারবার বলেছেন, ‘কোনো প্রমাণ পাবেন না আমাদের ব্যাপারে’ এবং তিনি কিন্তু তথ্য আইসিটি উপদেষ্টা ছিলেন। হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের নায়ক ছিলেন। ‘তার ডিপার্টমেন্টটা পুড়ে গেছে গতকাল রাতে, নাহিদ যেটার দায়িত্বে এখন। সরকারকে আমি বলব সিরিয়াসলি তদন্ত করতে কোনো স্যাবোটাজ আছে কি না।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম নগরের আহ্বায়ক অ্যাডোভোকেট গোলাম ফারুক, যুগ্ম আহ্বায়ক ছিদ্দিকুর রহমান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ আবুল কাশেম, অর্থ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জাহিদ হাসান চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সদস্য জাহিদুল করিম কচি, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম, সৈয়দ সোহরাব হোসেন পিয়াস প্রমুখ।