চট্টগ্রামের ‘অনন্যা আবাসিক’ নাম শুনলে মনে হয় এটি একটি গৃহায়ণ প্রকল্প, যেখানে মানুষ পরিবার নিয়ে বসবাস করে। যা শুনতে যেমন আকর্ষণীয়, বাস্তবে ততটাই হতাশাজনক। এলাকাটির নাম ‘আবাসিক’ হলেও এখন পর্যন্ত সেখানে গড়ে ওঠেনি কোনো বাসস্থান, তৈরি হয়নি কোনো আবাসিক পরিবেশ। শুধু নামেই ‘আবাসিক’, বাস্তবে জায়গাটি হয়ে আছে ফাঁকা জমির খণ্ড।
জানা যায়, এ প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন মূলত ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী শ্রেণির মানুষ, যাদের অনেকে প্রশাসনিক ক্ষমতা বা প্রভাব খাটিয়ে প্লট গ্রহণ করেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও সেখানে কেউ বসবাসের জন্য কোনো স্থাপনা নির্মাণ করেননি। প্লটগুলো ফেলে রাখা হয়েছে ভবিষ্যতে জমির দাম বাড়ার আশায় যা একপ্রকার নিষ্ক্রিয় দখল। এর ফলে প্রকৃত বাসস্থান সংকটে থাকা মধ্যবিত্ত বা সাধারণ নাগরিকেরা এই ধরনের সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চট্টগ্রামের বাড়িভাড়া দিনদিন বাড়ছে, বসবাসের জায়গার সংকট তীব্র হচ্ছে, অথচ এভাবে দখলদারিত্বের মাধ্যমে সরকারি প্রকল্প অকার্যকর হয়ে পড়ছে এটি গভীর উদ্বেগের বিষয়।
সরকারের উচিত, বিশেষ করে চট্টগ্রামের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরে মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য পরিকল্পিতভাবে লটারির মাধ্যমে আবাসনের সুযোগ তৈরি করা। এতে শুধু সামাজিক ন্যায় বিচারই নিশ্চিত হবে না, বরং নগরায়নের ভারসাম্যও রক্ষা পাবে। চট্টগ্রামের এই অনন্যা আবাসিক যেন কেবল ‘নামের অনন্যা’ না হয়ে সত্যিকার অর্থে একটি গৃহায়ণ সফলতা হয়ে উঠুক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
ফাতেমাতুজ জোহুরা তানিয়া
কলেজ রোড, চকবাজার, চট্টগ্রাম।