চট্টগ্রামবাসী না চাইলে চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের সিআরবিতে হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। এসময় মন্ত্রী আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করে আসছেন। চট্টগ্রামের মানুষ যদি সিআরবিতে কোনো স্থাপনা না চান, তাহলে সেটা জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে রেলমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ ইস্যুতে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের দ্বিধা বিভক্তির প্রসঙ্গে রেলপথ মন্ত্রী সুজন বলেন, সেটা দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রী আছেন, আমাদের তো গার্জিয়ান একজন আছেন। কাজেই এই জায়গা থেকে আমরা নিরাপদ। আমাদের সর্বোচ্চ একজন গার্জিয়ান আছেন। ঊনি সর্বশেষ যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা সবার জন্য শিরোধার্য।
রেলমন্ত্রী বলেন, যেভাবে সিআরবি বিষয়টি নিয়ে আপনারা গুরুত্ব দিচ্ছেন বা তুলে ধরছেন বা দেওয়া হচ্ছে; আমার মনে হয় এতটার কোনো অর্থ নেই। সিআরবি নিয়ে তথ্যগত কোথাও ভুল হচ্ছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা দরকার আছে। তিনি বলেন, এখন যে কথাগুলো বলে অভিযোগ দিয়ে- যে আন্দোলনের কথা বলা হচ্ছে, সেটার ভিত্তি কতটুকু তা যাচাই-বাছাই করতে আমাদের সময় দিতে হবে। তিনি বলেন, যে অভিযোগগুলো করা হচ্ছে এবং আন্দোলনের প্রক্রিয়া কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নাকি চট্টগ্রামের মানুষের স্বার্থে তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে।
এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে বলতে কয়েকদিন পূর্বে আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি। আন্দোলন তার পূর্বেই শুরু হয়ে গেছে। আবার পেপারে পত্রিকা ও টেলিভিশনে সেগুলো দেখতেছি। কিন্তু কি নিয়ে আন্দোলন আনুষ্ঠানিকভাবে এটা নিয়ে রেলের কাছে কেন দরখাস্ত করেনি। মন্ত্রীর বরাবরে কোনো দরখাস্ত করা হয়নি। আমাদের জিএম সাহেব আছেন তার কাছে কোনো দরখাস্ত করা হয়নি। ডিজি মহোদয় আছেন তার কাছেও করা হয়নি। সচিব আছেন সচিবের কাছেও করা হয়নি। কিংবা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোনো দরখাস্ত দেওয়া হয়নি। তাহলে কি কারণে এই আন্দোলন বা কেন আন্দোলন সেটা বুঝতে পারছি না। যদি দরখাস্ত বা অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো কাজ না হয় বা জোর করে যদি কিছু হয়; তখন না আন্দোলনের প্রশ্ন আসে।
সাংবাদিকেরা সিআরবিতে শহীদদের কবরের কথা উপস্থাপন করলে মন্ত্রী বলেন, আমি তো সেই কথায় বিতর্কে যেতে চাচ্ছি না। আমি বলছি- যে অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা সেভাবে পাই নাই। যখন বলা হল যে আপনাদের অভিযোগটা কী বলেন? তখন একটা অভিযোগ পেয়েছি সুতরাং সেটা খতিয়ে দেখব।
রেলমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পগুলোর বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত হলো সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) উৎসাহিত করা। সরকারের যত প্রকল্প আছে নীতিগতভাবে এর ৩০ শতাংশ যাতে পিপিপি’র অধীনে বাস্তবায়ন করা যায়; স্থানীয় এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ উৎসাহিত করার জন্য সরকার সেই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তারই আওতায় রেলওয়ের এ প্রকল্পটি রয়েছে।
রেলমন্ত্রী আরও বলেন, এ প্রকল্পের চুক্তি এবং যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া অনেক আগ থেকে শুরু হয়েছিল। বহু আগে ২০১৩-১৪ সাল থেকে এই প্রকল্পটির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু তখন কেউ আপত্তি তুলেনি। যখনই বাস্তবায়ন করতে আসল তখন আপত্তিগুলো আসছে। তা ছাড়া এখানে অন্যকিছু হচ্ছে না বরং হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজ হচ্ছে। কিন্তু একশ্রেণীর মানুষ আছে, যাদের কাছে কোনো কিছুই ভালো লাগে না। কাজেই এ আন্দোলন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নাকি সত্যিই চট্টগ্রামের মানুষের স্বার্থে করা হচ্ছে; সেটা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নেবেন।
আন্দোলনকারীরা সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতা করছেন, সিআরবি ছাড়া অন্য কোথাও হাসপাতালে কারো বিরোধিতা নেই এমন প্রশ্নের জাবাবে মন্ত্রী বলেন, আমাদের এক শ্রেণির মানুষ আছে, কোনো কাজই তাদের ভালো লাগে না।
চলে যাবার সময় সাংবাদিকরা কক্সবাজার ও ঘুমধুম রেললাইন নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, ঘুমধুমটা বেশি জরুরি নাকি কক্সবাজার বেশি জরুরি। তাহলে শুধু ঘুমধুম কেন? পজেটিভ নিউজ করেন আপনারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসংকট উত্তরণে অর্থবহ সহযোগিতার ডাক
পরবর্তী নিবন্ধএকসঙ্গে তিন কন্যা