রমজানে ভোক্তা যাতে স্বস্তিতে বাজার করতে পারে তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। বাজার স্থিতিশীল রাখতে পুরো রমজান মাসে চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার উপজেলাগুলোকে ২১টি সার্কেলে ভাগ করা হয়েছে। এসব সার্কেলে ৪০০ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ভোক্তার সাথে প্রতারণাসহ সব রকম অনিয়মের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে ব্যবস্থা। ব্যবসা করতে হলে ভোগ্যপণ্যের বাজারসহ সব বাজারে ব্যবসায়ীদের অবশ্যই মূল্য তালিকা প্রদর্শন করতে হবে জানিয়ে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম আজাদীকে বলেছেন, রমজানে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে আমরা সর্বোচ্চ কঠোর হব। কাউকে ন্যূনতম ছাড় দেওয়া হবে না। পণ্য মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট মেনে নেওয়া হবে না।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, রমজানে ভোক্তা যাতে স্বস্তিতে থাকে সেজন্য পুরো চট্টগ্রামকে ২১টি সার্কেলে ভাগ করা হয়েছে। নগরীতে ৬টি আর উপজেলায় ১৫টি। এসব সার্কেলে ৪০০ অভিযান পরিচালনা করা হবে। প্রতিদিন মাঠে থাকবে জেলা প্রশাসনের টিম। কৃষি অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিদপ্তরও রমজানজুড়ে মাঠে থাকবে। বোতলের সয়াবিনের সংকট আর চড়া দামে খোলা তেল বিক্রির বিষয়টিও নজরে রয়েছে জেলা প্রশাসনের। প্রশাসনের কাছে খবর রয়েছে, ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি হতে পারে। এ বিষয়ে শীঘ্রই খাতুনগঞ্জসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠকে বসবে প্রশাসন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, কোনোভাবেই ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে দেওয়া হবে না। যারা চেষ্টা চালাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তিনি বলেন, ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট ঠেকাতে আমরা ব্যবসায়ীদের সাথে বসতে যাচ্ছি। সেখানে কঠোর বার্তা থাকবে।
তিনি বলেন, রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে ইতোমধ্যে ১৫ উপজেলায় ১৫টি মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। নগরীতে করা হয়েছে ৬টি সভা। ব্যবসায়ীদের সাথে হওয়া এসব সভায় বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের পাশে রয়েছেন জানিয়েছে তিনি বলেন, রমজানে যাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি না পায় সেজন্য ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন। ব্যবসায়ীরাই আমাদের এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে না বলেও তারা জানিয়েছেন।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত একটি সভার কথা উল্লেখ করে ফরিদা খানম বলেন, জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ব্যবসায়ী ও বাজার সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে বসেছিলাম। সেখানে তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে সকল দপ্তর থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমি বলেছি, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ যাতে রোজায় স্বস্তিতে বাজার করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সয়াবিন তেলের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, রমজানে মুরগি, গরু, কাঁচাবাজার ও ওষুধের মার্কেটেও অভিযান পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি কাপড়ের দোকান বা মার্কেটেও আমাদের টিম যাবে। রমজানের প্রতিটি দিন চট্টগ্রামজুড়ে জেলা প্রশাসনের টিম মাঠে থাকবে। ভোক্তা যাতে স্বস্তিতে থাকে সেজন্য যা যা প্রয়োজন সবকিছু করা হবে।