বাংলাদেশ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ নিয়ে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারির পর কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়ার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আসতে শুরু করেছেন শিশু, বৃদ্ধ, নারী–পুরুষর।
চকরিয়ার উপকূলীয় ইউনিয়ন বদরখালী, পশ্চিম বড় ভেওলা, কোনাখালী, ঢেমুশিয়া, সাহারবিল, চিরিঙ্গা, ডুলাহাজারা, খুটাখালী ইউনিয়নের উপকূলের বাসিন্দাদের গতকাল শনিবার বিকেল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে দেখা গেছে। সাথে নিয়ে আসছেন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও গবাদী পশু। একইভাবে পেকুয়ার মগনামা, উজানটিয়া, রাজাখালী ও সদর ইউনিয়নের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করতে শুরু করেছে লোকজন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ শাখার চকরিয়ার উপ–বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ইশতিয়াক নয়ন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানার সময় চকরিয়ার যেসব বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব স্থাপনের জন্য সকল প্রস্তুতি রয়েছে। উপকূলের স্লুইস গেটগুলোও যথাযথভাবে তদারকি করা হচ্ছে।
চকরিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি কমিশনার মো. রাহাত উজ–জামান দৈনিক আজাদীকে বলেন, শুক্রবার রাতে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারির পর পশ্চিম বড় ভেওলা ও ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছিলেন মাত্র ৫৮ জন। আজ শনিবার (গতকাল) ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারির পর বিকেল চারটা থেকে লোকজন উপকূলীয় ইউনিয়নগুলোর বেশ কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে শুরু করে। তারা যাতে এখানে এসে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার না হন সেই বিষয়ে আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে আসা লোকজনকে প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। দুটি অ্যাম্বুলেন্সসহ ১৮টি মেডিক্যাল টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করছি, সবকিছুই ঠিকমতো চলবে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে। এজন্য সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলাজুড়ে ৯৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি উপকূলীয় ইউনিয়নগুলোর ৭টি মুজিবকিল্লাতে গবাদী পশু নিয়ে আসা হচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চকরিয়ার আশ্রয় কেন্দ্রে ভিড় করা লোকজনের জন্য প্রাথমিকভাবে ৫ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১ লাখ টাকা, ১০০ কার্টন বিস্কুট, ছোট ও বড় মিলিয়ে ২২৬ কার্টন ড্রাই কেক, ৪ কার্টন খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য ৩ হাজার ট্যাবলেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে কঙবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। পেকুয়ায় আশ্রয় নেওয়া লোকজনের জন্যও পরিমাণমতো এসব খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানান পেকুয়ার সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. জাহিদুল ইসলাম।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) চকরিয়ার টিম লিডার ও পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রতি টিমে ২০ জন করে সিপিপি সদস্যের সমন্বয়ে ৭০টি টিমের ১৪০০ সদস্য উপজেলাজুড়ে মাঠে তৎপর রয়েছে। তারা জনগণকে সচেতন করাসহ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। আশা করছি, আজ রাতের মধ্যেই উপকূলে বসবাসরত জনগণকে সাইক্লোন শেল্টারে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।