চকরিয়ায় শুরু হয়েছে তিনদিনব্যাপী নারী উদ্যোক্তা মেলা। মেলায় নারীদের হাতে তৈরি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, শিশুদের খেলনা ও বাড়ির সৌন্দর্যবর্ধনে ব্যবহার্য্য রকমারী সামগ্রী উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উদ্বোধনের পর থেকে মেলায় উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঘরে নারীদের হাতে তৈরি জায়নামাজ, বেডশিড, চাদর ও ওড়নাসহ হরেক রকমের জিনিসপত্র নিয়ে অন্তত ৩০টি স্টল বসেছে মেলায়। এছাড়া বাঙালির চিরাচরিত ঐতিহ্যবাহী পিঠা-পুলির স্টলও শোভা পাচ্ছে মেলায়। পৌরশহরের বিজয় মঞ্চে এই মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ। উদ্বোধনী বক্তব্যের পর প্রতিটি স্টল ঘুরে দেখেন ইউএনও। মেলার আয়োজন করেন নারী উদ্যোক্তা ফোরাম।
নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সভাপতি শারমিন জন্নাত ফেন্সি জানান, মেলায় নারীদের হাতে তৈরি রকমারী জিনিসপত্রের সমাহার ঘটেছে অন্তত ৩০টি স্টলে। শনিবার (আজ) পর্যন্ত এই মেলা চলবে।
ষাটের কাছাকাছি বয়সের নারী উদ্যোক্তা জারিয়াতুল মোস্তফা। সরকারি চাকরির পাশাপাশি তিনিই চকরিয়ার প্রথম নারী উদ্যোক্তা। ‘মা বুটিকস’ নামে তিনি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। মেলায় তাঁর স্টলটিও নজর কাড়ছে সবার। এই স্টলে তাঁর হাতের সুই-সুঁতোয় তৈরি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবি, আয়না, পটারি শো-পিছ, গ্রিল ফুলদানি, সিনারি, মশারির কভার, মাকরেন, পাশ বালিশ কভার, পাপোষ, কাঁচের জার, মাটির টব, ডাইনিং সেট, মাটির ওয়াল মেট, বেডশিট, ঘড়ি, ফুলের চাকা, টিস্যু হোল্ডার, কুশন, নামাজের হিজাব, পাশ বালিশ, বিভিন্ন ফুলের ছবি, নকশি কাঁথাসহ হরেক প্রজাতির হস্তশিল্পের সমাহার ঘটেছে।
জানতে চাইলে জারিয়াতুল মোস্তফা দৈনিক আজাদীকে বলেন, সময় পেলেই হস্তশিল্পের কাজে মনোনিবেশ ঘটাই। বয়স এখন ষাটের কাছাকাছি হলেও হস্তশিল্পের কাজ নিয়ে পড়ে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কারণ আমার দেখাদেখি এখানে নারী উদ্যোক্তার প্রসার হউক সবসময় সেই ভাবনা কাজ করে আমার মধ্যে।
ইউএনও সৈয়দ শামসুল তাবরীজ দৈনিক আজাদীকে বলেন, একজন নারী সংসারে সকল কাজ সামাল দেয়ার পাশাপাশি তিনি একজন উদ্যোক্তা হিসেবেও পরিণত হয়েছেন। নারীর অগ্রযাত্রার কারণেই দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। এজন্য আরো বেশি করে নারী উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে।
ইউএনও বলেন, বর্তমানে ই-শপিংয়ের একটি অবাধ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ঘরে বসেই তৈরি হস্তশিল্পের সামগ্রী অনলাইনের মাধ্যমেই বিক্রি করে বড় অঙ্কের টাকা আয় করা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আরো বেশি নারী উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে এবং এজন্য যত ধরনের সাপোর্ট দেওয়া দরকার তাই দেওয়া হবে।