কক্সবাজারের চকরিয়ার এমন কয়েকটি গ্রাম রয়েছে যেখানে সরাসরি কোনো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। এসব গ্রামে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে পানিপথ। কিন্তু এবারের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুর্গম এসব গ্রামের মানুষ। একনাগাড়ে গত ছয়দিন ধরে তাদের মানবেতর জীবনযাপন করার সেই তথ্য চকরিয়া কেন্দ্রীক ‘চাইয়্যো টশা’ নামের একটি ফেসবুক পেজে তুলে ধরেন এডমিন শাকিব। সেই বিষয়টি অবগত হন সুদূর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া একদল শিক্ষার্থী। শাকিবের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এসব শিক্ষার্থী গতকাল রবিবার পানিবন্দি অবস্থায় অনাহারে–অর্ধাহারে থাকা পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে খাদ্যসহায়তা নিয়ে। নানান পদের শুকনো খাবারের প্যাকেট এবং চালভর্তি ত্রাণের বস্তা পেয়ে পরিবারগুলোর সদস্যদের মাঝে হাসি ফুটেছে গতকাল থেকে। অনেকে দুই হাত তুলে দোয়াও করছেন এসব শিক্ষার্থীর জন্য।
‘চাইয়ো টশা পেইজের’ শাকিবের আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন বাংলাদেশের আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শামীম আহমেদ (বদ বচন), চট্টগ্রামের কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রিয়াদ মোরশেদ (দুই একে দুই), নেয়ামত রেজা নিলয় (নিলয় ব্রো), শফি আলম (শফি)। তাদের এই ত্রাণ তৎপরতায় সাথে রয়েছেন নূর উদ্দিন খান, আনিসুল ইসলাম ফারুকী, হাসনাইন বিল্লাহ আতিক, জিহাদুল ইসলাম, মো. শেফায়েত, মাঈন উদ্দিন কবিরসহ অনেকে।
তারা ডেইঙ্গাকাটা, পহরচাঁদা, শান্তিবাজার ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নের মাতামুহুরী নদীতীরের দ্বীপকূলের ১১০০ পরিবারে ত্রাণ সহায়তার প্যাকেট হস্তান্তর করা হয়।
আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ‘বদ বচন’ এর শামীম আহমেদ, ‘দুই একে দুই’ এর রিয়াদ মোরশেদ ‘নিলয় ব্রো’ এর নেয়ামত রেজা নিলয় ও ‘শফিউল আলম শফি’ এর শফি দৈনিক আজাদীকে জানান, তাঁরা জানতেন–ই না, চকরিয়ার এসব দুর্গম গ্রাম এবং সেখানে হাজারো পরিবার কয়েকদিন ধরে বানের পানিতে আটকা অবস্থায় খাদ্যসংকটে ভুগছেন।
তাদের কার্যক্রমে সার্বিক সহায়তা দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য জাফর আলম এবং তাঁর পুত্র তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন। এজন্য শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চকরিয়ার পূর্ব বড় ভেওলা কদ্দছড়া, ঈদমণি, ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের অনেক গ্রাম বানের পানিতে তলিয়ে রয়েছে। অপেক্ষাকৃত অনেক নিচু এলাকা হওয়ায় এসব গ্রামের হাজারো পরিবারের জীবন–যাত্রা কাটছে বেশ দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে।