চকরিয়ায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। গ্যাংয়ের সদস্যরা ছিনতাইসহ জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে চক্রের দুই সদস্যকে ছিনতাই করার সময় স্থানীয় জনতা পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তারা দুইজনই স্কুল শিক্ষার্থী।
পুলিশ জানায়, মোস্তফা কামাল মনির (১৯) ও রাফিজুল ইসলাম রাতুল (১৯) নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত আরো দুই সহযোগীর নাম প্রকাশ করেছে। এ ঘটনায় ছিনতাইয়ের শিকার দোকান কর্মচারী আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে চার ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে, উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের কুতুবদিয়া পাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে মোস্তফা কামাল মনির, চকরিয়া পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সোসাইটি পাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. রাফিজুল ইসলাম রাতুল, একই এলাকার জাফর আলমের ছেলে আরিফ (১৯) ও মনু ড্রাইভারের ছেলে ফাহিমকে (১৯)। পুলিশ ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে প্রথম দুজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। তাদের একজন চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ এবং অপরজন কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের ছাত্র। এছাড়া বাকি দুজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয়রা ব্যবসায়ীরা জানান, চকরিয়া পৌরশহরের চিরিঙ্গা বালিকা বিদ্যালয় সড়ক, সরকারি হাসপাতালের পেছনের সড়ক, কোরক বিদ্যাপীঠ এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনকে টার্গেট করে ছিনতাই করছে। তাদের উৎপাতে এলাকার নারীরাও বাড়ি থেকে বের হতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে টহল জোরদারের দাবি উঠছে।
গতকাল শুক্রবার থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বাদী আমজাদ হোসেন উল্লেখ করেন, তিনি পৌরশহরের বালিকা বিদ্যালয় সড়কের একটি হার্ডওয়্যার দোকানের কর্মচারী। গত বৃহস্পতিবার রাতে দোকান বন্ধ করে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। পথে ছিনতাইকারী দলের চার সদস্য তার কাছ থেকে মোবাইল ও নগদ ৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তিনি চিৎকার দিলে তাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী উল্লেখ করে তারা মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে স্থানীয় জনতা এগিয়ে এলে দুই ছিনতাইকারী পালিয়ে যায়। তবে বাকি দুজনকে ধরে গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, ‘কিশোর গ্যাং বা ছিনতাইকারী বলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে। এ ধরনের অপরাধচক্রের সদস্যদের তালিকা ইতোমধ্যে করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে স্থানীয় জনতা বৃহস্পতিবার রাতের মতো এগিয়ে এলে অপরাধ নির্মূল অনেকটা সহজ হবে।’