কক্সবাজারের চকরিয়ায় কয়েকঘণ্টার ব্যবধানে দুই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তদ্মধ্যে এক নারীকে বালিশ চাপায় শ্বাসরোধে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে লাশ চালার বিমের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ গতকাল শুক্রবার ভোররাতে একজনকে আটক করেছে। অপরদিকে আরেক গৃহবধূ পারিবারিক কলহের জেরে চিরকূট লিখে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মুসলিম পাড়ার মোয়াজ্জেম হোসেনের বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার রাতে তার স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার (২৭) এবং একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কোরবানিয়া ঘোনা গ্রামের হাফেজ শফিকুর রহমানের বাড়ি থেকে গতকাল শুক্রবার দুপুরে তার স্ত্রী রুমানা আক্তার মুন্নীর (৩০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ দুটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে হারবাংয়ের মুসলিম পাড়ার মোয়াজ্জেম হোসেনের প্রথম স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তারের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় সিআইডির একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ইয়াছমিনকে বালিশ চাপায় হত্যার পর লাশ বাড়ির চালার বিমের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় লোকজন ওই নারীকে ঝুলতে দেখে মেঝেতে নামিয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গৃহবধূ ইয়াছমিন আত্মহত্যা করেনি। তাকে বালিশ চাপায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তাই সিআইডির ক্রাইম সিন দলকে ডেকে আনা হয়। ইয়াছমিনের বাপের বাড়ি উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে। তার ৭ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে।
এদিকে শুক্রবার ভোররাতে হারবাংয়ের কোনবানিয়া ঘোনা গ্রামের হাফেজ শফিকুর রহমানের স্ত্রী রুমানা আক্তার মুন্নী পারিবারিক কলহের জের ধরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে এ সময় স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, রুমানা আত্মহত্যা করার আগে একটি চিরকুট লিখে যান। সেই চিরকুটে লেখা রয়েছে- ‘আমার দুটি সন্তানকে সবাই দেখে রাখবেন। …মানসিকভাবে অনেক অত্যাচারিত মেয়ে আমি। আর পারছি না। কবরই আমার জন্য শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ হাফেজ।’
চকরিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, হারবাং ইউনিয়নের পৃথক ওয়ার্ডের দুই বাড়ি থেকে দুই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তদ্মধ্যে একজনকে পরিকল্পিতভাবে বালিশ চাপায় হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অপর নারী গলায় ফাঁস দিয়েই আত্মহত্যা করেছেন। তার একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। দুই পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।