কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে এ পর্যন্ত ১২টি ইউনিয়নে প্রশাসক এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা আয়ন–ব্যয়ন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনে এসব ইউনিয়নে ইউএনও এবং এসিল্যান্ডকে প্রশাসক ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা আয়ন–ব্যয়ন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। সর্বশেষ ছয়টি ইউনিয়নে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয় পশ্চিম বড় ভেওলা, সাহারবিল, হারবাং, লক্ষ্যারচর, ফাঁসিয়াখালী ও বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদে। গতকাল সোমবার প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মামলা সংক্রান্ত আইনি জটিলতার কারণে চকরিয়া উপজেলার এসব ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা দীর্ঘদিন ধরে পরিষদের সেবা কার্যক্রমে অনুপস্থিত রয়েছেন। এই অবস্থায় জনগণের মাঝে ইউনিয়ন পরিষদের নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে উপজেলার ৬ ইউনিয়নে যথাক্রমে পশ্চিম বড় ভেওলা, সাহারবিল, হারবাং ইউনিয়ন পরিষদে ইউএনও মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, লক্ষ্যারচর ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফান উদ্দিনকে প্রশাসক এবং বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন মানিককে আর্থিক ক্ষমতা দিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এসব ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়ে পশ্চিম বড় ভেওলায় সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা, সাহারবিলে নবী হোছাইন, হারবাংয়ে মেহরাজ উদ্দিন মিরাজ, লক্ষ্যারচরে মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব বুলেট, ফাঁসিয়াখালীতে হেলাল হেলাল উদ্দিন ও বিএমচরে জাহাঙ্গীর আলম দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
সামপ্রতিক সময়ে উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়ন, কোনাখালী ইউনিয়ন ও ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে জেলা প্রশাসক প্রজ্ঞাপন জারি করেন। তন্মধ্যে চিরিংগায় উপজেলা কৃষি সমপ্রসারণ কর্মকর্তা ইশরাত জাহান সুইটি ও কোনাখালীতে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেনকে প্রশাসক এবং ডুলাহাজারায় রিয়াজ উদ্দিন শিপুকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়। এই তিনটিতে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন যথাক্রমে জামাল হোসাইন চৌধুরী, দিদারুল হক সিকদার, হাসানুল ইসলাম আদর। এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি একইভাবে চকরিয়া উপজেলার তিন ইউনিয়ন যথাক্রমে সুরাজপুর–মানিকপুর, বদরখালী ইউনিয়নে প্রশাসক হিসেবে ইউএনও মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, এসিল্যান্ড মো. এরফান উদ্দিন ও কাকারা ইউনিয়ন পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগ দেন জেলা প্রশাসক। এই তিন ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন যথাক্রমে আজিমুল হক আজিম, নূরে হোছাইন আরিফ, শাহাব উদ্দিন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলায় ১৮টি ইউনিয়ন পরিষদের ১২ ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়েছে। অবশ্য একই সময়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আর্থিক ক্ষমতাসহ স্বাভাবিকভাবে অদ্যাবধি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন জামায়াত দলীয় চেয়ারম্যান বরইতলীর মো. ছালেকুজ্জামান ও খুটাখালীতে মাওলানা আবদুর রহমান। এখনো প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়নি বাকি চার ইউনিয়ন যথাক্রমে বমু বিলছড়ি, ঢেমুশিয়া, পূর্ব বড় ভেওলা ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নে। উল্লেখ্য, উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৬টিতেই আওয়ামী লীগ দলীয় এবং সমর্থিতরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। বাকি দুটিতে জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতির কারণে ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। এই অবস্থায় নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের আলোকে উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ১২টিতে প্রশাসক এবং আয়ন–ব্যয়ন কর্মকর্তা হিসেবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে।