চকরিয়ায় ১৯৫০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্য

৬৪ হাজার কৃষক পরিবারে ব্যস্ততা

ছোটন কান্তি নাথ, চকরিয়া | শনিবার , ২৭ জুলাই, ২০২৪ at ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে প্রায় ৬৪ হাজার কৃষক পরিবার।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বোরো আবাদ শেষ করে ফসল গোলায় তোলার পর বর্ষা মৌসুমের শুরুতে ভাল বৃষ্টিপাত হয়। এ সময় কৃষি বিভাগের নানা পরামর্শ মোতাবেক আমন আবাদের বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত ছিলেন প্রান্তিক কৃষক। বর্তমানে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় এই সময়কে আমন আবাদের উপযুক্ত সময় হিসেবে দেখছেন কৃষকরা। ১৬ জুলাই থেকেই আমন আবাদ শুরুর সময় নির্ধারণ করা হয় কৃষি বিভাগ থেকে। বর্তমানে সকালসন্ধ্যা চাষিরা তাদের জমিতে আমনের চারা রোপনে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে দলবদ্ধ কৃষকেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। বৃষ্টির মধ্যেও কাজ করছেন। কিছু জায়গায় রাতেও মাঠে ব্যস্ত দেখা গেছে কৃষকদের।

কৃষক এবং কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, গত বছর আমন আবাদের শুরুতে অনাবৃষ্টি এবং লবণাক্ত পানির প্রভাবে আমন আবাদের শুরুতে সেচ দেওয়া নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ছিলেন কৃষকরা। তবে এবারের আমন চাষের শুরুতে গত বছরের সেই চিত্র নেই বললেই চলে। এতে উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ধানের চারা রোপনের ধুম লেগেছে প্রায় ৬৪ হাজার কৃষক পরিবারে।

কোনাখালী ইউনিয়নের মরংঘোনা গ্রামের কৃষক দিদারুল ইসলাম, পূর্ব বড় ভেওলার মাইজপাড়ার কৃষক সোনা আলী, কৈয়ারবিলের ভরাইন্যারচর গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম আজাদীকে জানান, গত কয়েকদিনের হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাতে সেচ সমস্যা নিয়ে দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে। টানা বৃষ্টিপাত যেন কৃষকের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। পরিবেশ অনুকূলে থাকায় আমনের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, প্রতিবছরের মতো এবারও উপজেলার আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। গত বছর এই সময়ে অনাবৃষ্টির কারণে ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছিল জমি। তবে চলতি মৌসুমে সেই অবস্থা নেই। হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত থাকায় ধানের চারা রোপণের বেশ উপযোগী হয়ে উঠেছে জমিগুলো। ইতোমধ্যে কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। কৃষি বিভাগের ব্লক ভিত্তিক নিয়োজিত কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে তৎপর রয়েছেন।

উপজেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজীব দে আজাদীকে জানান, প্রতিবছর আমন মৌসুমে ধান ও সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় বীজ, সার, কীটনাশক, কৃষি উপকরণসহ বিভিন্নভাবে কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা দেওয়া হয়ে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পানি সেচের সমস্যা নিয়ে দুশ্চিন্তা কেটে গেছে কৃষকের। তিনি আরও জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও উফসি প্রজাতির ব্রিধান ৭৫, ৭১, ৫১, ৯৫ এবং হাইব্রিড প্রজাতির টিয়া, মুক্তি, হীরা ধানের আবাদ করা হচ্ছে।

চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন আজাদীকে বলেন, কয়েকদিন ধরে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হওয়ায় জমিকে চাষের উপযোগী করা এবং বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করেন কৃষক পরিবার। ১৬ জুলাই থেকে আমন ধানের চারা রোপণ শুরু হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এবারও আমন আবাদের লক্ষ্যামাত্রা অর্জিত হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে বাণিজ্য খাতে ২৫০ কোটি টাকার ক্ষতি
পরবর্তী নিবন্ধচকরিয়ায় জামায়াতের রোকনসহ ৯ জন গ্রেপ্তার