২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর কক্সবাজারের চকরিয়ার মানিকপুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন সুরাজপুর–মানিকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহ–সভাপতি আবু বক্কর। ওইদিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী। এনিয়ে তার স্ত্রী সোনিয়া সুলতানা বাদী হয়ে হত্যাকাণ্ডের পরদিন ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। প্রায় ১০ বছর আগে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হওয়া সেই যুবলীগ নেতা আবু বক্করকেও আসামি করা হয়েছে গত শনিবার চকরিয়া থানায় ১৭৮ জনের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া কিশোর মিজানুর রহমান হত্যা মামলায়।
এই মামলার এজাহারনামীয় আসামির তালিকায় মৃত যুবলীগ নেতা আবু বক্কর ক্রমানুসারে ১১৪ নম্বর আসামি। কাকারা ইউনিয়নের মাইজপাড়ার মোহাম্মদ শাহ আলম বাদী হয়ে তার কিশোর পুত্র মিজানুর রহমানকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রায় ১১ বছর পর থানায় মামলাটি রুজু করেন। এই মামলায় কঙবাজার–১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সিনিয়র নেতাদেরও আসামী করা হয়।
এই বিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঞ্জুর কাদের ভূইয়া বলেন, ‘১১৪ নম্বর আসামীর বিষয়ে খোঁজ–খবর নেওয়া হবে। বাদী এজাহারে যেসব আসামীর নাম উল্লেখ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হয়েছে। কীভাবে মৃত ব্যক্তি আসামি করলেন, বাদীর সঙ্গে কথা বলা হবে।’
মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী (এফআইআর) ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর বিএনপি ঘোষিত সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি ছিল। এরই অংশ হিসেবে চকরিয়া পৌর শহরের জনতা মার্কেট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ছিল। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে কাকারা ও সুরাজপুর–মানিকপুর ইউনিয়নের বিএনপির নেতা–কর্মী মিছিল নিয়ে রওনা দেয়। সেই মিছিলে কাকারার মাইজপাড়ার শাহ আলমের ছেলে কিশোর মো. মিজানুর রহমানও যোগ দেয়। মিছিলটি কাকারা–মানিকপুর–সুরাজপুর রোডের কাকারা পুলেরছড়া ব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির মিছিলে গুলি ছুড়তে থাকে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে কিশোর মিজানুর রহমান নিহত হয়। এ ঘটনায় ১০ থেকে ১২ জন আহত হন।