কক্সবাজারের চকরিয়ায় গহীন জঙ্গলের ভেতর একটি বন্য হাতিকে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই হাতিটিকে অনেকটা গোপনে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে বনবিভাগের পক্ষ থেকে।
জানা গেছে, চকরিয়ার খুটাখালী ইউনিয়নের ফুলছড়ি বনবিটের সংরক্ষিত বনের কেলিবিলের কেরামত ঘোনার পূর্বাংশ এলাকায় গহীন জঙ্গলের ভেতর বরই বাগানের কাছে ওই হাতিটিকে হত্যা করা হয়। হাতিটিকে মাটিতে পুঁতে ফেলার কাজে নিয়োজিত একাধিক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আজাদীকে জানান, জুলাই মাসের ২৪ তারিখের আগে আনুমানিক ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সের একটি হাতিকে গুলি করা হয়। এর পর সেই হাতিটি মারা গেলেও কয়েকদিন পর্যন্ত মরা অবস্থায় জঙ্গলের ভেতর পড়ে ছিল। এতে হাতিটির শরীরের বিভিন্ন অংশ পঁচে–গলে যায়। এর পর ২৪ জুলাই দুপুরে হাতিটিকে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। শ্রমিকরা আরও জানান, খুটাখালী ইউনিয়স্থ পূর্ণগ্রাম বনবিট এলাকায় ব্যক্তিমালিকানার বরই বাগান রয়েছে। সেই বাগানে প্রতিনিয়ত বরই খেতে যায় বন্য হাতির দল। এতে বরই বাগানের ক্ষতিও করে বন্য হাতিগুলো। সেই বরই বাগান ক্ষতি থেকে রক্ষা করতেই হাতিটিকে হত্যা করা হয়।
ফুলছড়ি বনবিট কর্মকর্তা ফজলুল কাদের চৌধুরী প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করেন একটি হাতি মারা গেছে। তবে সেই হাতিটির বয়স, পুরুষ না–কী মাদী ছিল সেটা তিনি বিস্তারিত জানাতে পারেননি।
অভিযোগ উঠেছে– বনে গুলি করে হাতি মেরে ফেলার ঘটনায় রহস্যজনক কারণে আইনগত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘এই বিষয়ে বনবিভাগের পক্ষ থেকে কেউই থানায় আসেননি।’
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা হুমায়ুন আহমদ ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
অপরদিকে হাতিটির ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেননি বলে দাবি করেছেন চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের বন্য প্রাণী চিকিৎসক হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইন।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকবছরে কক্সবাজার বনাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে গহীন জঙ্গলের ভেতর ফসলি জমি, ফলজ বাগান রক্ষায় বৈদ্যুতিক ফাঁদ, গুলি করাসহ নানা কায়দায় বেশ কয়েকটি হাতিকে হত্যা করার ঘটনা ঘটেছে।