নগরের চকবাজারে আরিফ নামে মহসিন কলেজের এক ছাত্রকে পুলিশে সোপর্দ করার জের ধরে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রদল ও শিবিরের নেতাকর্মীরা। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। গত রাত ১০ টার দিকে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। গত রাত দুইটায় এ রিপোর্ট লেখার সময় মুখোমুখি অবস্থানে ছিল দুই গ্রুপ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ছাত্রশিবির দাবি করে, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে। ছাত্রদলের গুলিতে ২ জন গুলিবিদ্ধ ও অন্তত ১৫–২০ শিক্ষার্থী ও শিবির কর্মী আহত হয়। তবে ছাত্রদলের দাবি, ছাত্রশিবির তাদের দিকে গুলি করেছে। একজন গুলিবিদ্ধসহ তাদের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, মহসিন কলেজের আরিফ নামের এক ছাত্রকে ধরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা চকবাজার থানা পুলিশের কাছে তুলে দেয়। তারা আরিফকে ছাত্রলীগ কর্মী বলে দাবি করে। তবে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা আরিফকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ কর্মী আরিফকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে আসে শিবিরের নেতাকর্মীরা। তারা থানা অবারুদ্ধ করে এবং সেখানে থাকা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মারধর করে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রশিবির।
ইসলামী ছাত্র শিবিরের চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর সভাপতি তানজীর হোসেন জুয়েল বলেন, কিছুদিন আগে যুবদল থেকে বহিষ্কৃত এমদাদুল হক বাদশা নামে এক যুবদল নেতার অনুসারীরা ভ্যান থেকে চাঁদাবাজি করতে গেলে মহসিন কলেজের সাথী আরিফসহ জামায়াতের কয়েকজন তাদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এই ঘটনার ক্ষোভে আরিফকে একা পেয়ে ওই যুবদল নেতার অনুসারীরা ছাত্রলীগ বলে থানায় নিয়ে যায়। থানা থেকে আরিফকে ছাড়াতে গেলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা ছাত্রদল ও যুবদলের সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র নিয়ে মহসিন কলেজ শিবিরের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে।
এ বিষয়ে চকবাজার থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আলাউদ্দিন আলো আজাদীকে বলেন, আরিফ নামে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় মহসিন কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে ছাত্রশিবির এসে দাবি করে আরিফ তাদের কর্মী। তারা আরিফকে ছাড়িয়ে নিতে থানা অবরুদ্ধ করে এবং সেখানে থাকা মহসিন কলেজ ছাত্রদলের ছেলেদের উপর হামলা করে। আরিফ ৫ আগস্ট এর আগে ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেছে, তখন সে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিল; যার অনেক প্রমাণ রয়েছে। এখন ৫ তারিখের পর ভোল পাল্টিয়ে ছাত্রলীগ থেকে শিবির হয়ে গেলে বা ছাত্রলীগের একজন কর্মীকে শিবিরের প্রশ্রয় দেয়াটা তো আমরা মেনে নিতে পারব না। ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন করার জন্য তো আমরা রাজপথে রক্ত দিইনি।
এ বিষয়ে যুবদল নেতা এমদাদুল হক বাদশা আজাদীকে বলেন, আমার নামে মিথ্যা রটনা রটানো হচ্ছে। ছাত্রশিবির ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে ঘটনা অন্যদিকে রূপ দিতে যুবদলকে টেনে আনছে। এখানে যুবদলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এই ব্যাপারে চকবাজার থানা পুলিশকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।