বান্দরবানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে ঘুরে দাড়ানোর স্বপ্নে পুনরায় ধানের চারা রোপন করছেন কৃষক। নিঃস্ব হওয়ার পর চোখে মুখে দুশ্চিন্তার চাপ থাকলেও মনে সাহস নিয়ে সোনা ফলাতে মাঠে নেমে পড়েছেন তারা। অনেকে অর্থের অভাবে শ্রমিক দিয়ে কাজ করতে পারছেন না। তবে বসে নেই কেউই। প্রখর রোদে নিজেই করছেন জমি প্রস্তুত ও চারা রোপন। গত শনিবার বান্দরবান সদর উপজেলার সূয়ালক ইউনিয়নের ভাগ্যকুল এলাকায় দেখা যায়, শ্রমিকের মজুরি না থাকায় একা জমিতে ধানের বীজ বপন করছেন কৃষক মো. কবির। তিনি বলেন, প্রকৃতির উপরে কারো হাত নেই। বন্যায় ৭০ কাঠা জমির ধান ও সবজি খেতের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। হাতে কোনো অর্থ নেই, ধারদেনা করে চারা কিনে ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে বারি–১২ ধানের বীজের চারা রোপন করছি। মজুরির টাকা না থাকায় শ্রমিক কাজে লাগাতে পারিনি। একা যতটুকু সম্ভব আস্তে আস্তে চারা রোপন করে চলেছি। তিনি বলেন, সব জমিগুলোও নিজের নয়, বর্গাচাষী হিসেবেই চাষ করি। আগামীতে ফসল ভালো হলে ধান বিক্রি করে সবার ধারদেনার টাকাগুলো পরিশোধ করে দিবো।
ভাগ্যকুল–কাইচতলী সড়কে রাস্তার পাশে দেখা হলো আরও কয়েকজন কৃষকের। তাদের একজন বয়োজ্যেষ্ঠ কৃষক আবুল কাশেম। ছাতা মাতায় খাড়া রোদের মধ্যে বীজতলা ধানের চারা নাড়াচাড়া করছিলেন। তিনি বলেন, বন্যায় জমির ফসল নষ্টে হয়ে যাওয়ায় ধানের চারা সংগ্রহ করতে সাতকানিয়া থেকে এসেছি। বান্দরবান জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ এম এম শাহনেওয়াজ বলেন, অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধস ও বন্যায় জেলার সাতটি উপজেলার ৩৩টি ইউনিয়নে নয় হাজার ৮৫৫ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যারমধ্যে ৪ হাজার ৭৫৭ হেক্টর জমির বীজ ধান। ক্ষতি পোষাতে কৃষকদের বিনামূল্য বীজ, সার সরবরাহ এবং প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে।