ঘুম মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যখন সচেতন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া স্তিমিত থাকে। ঘুমানোর কারণ সম্বন্ধে বিজ্ঞানীরা এখনো পুরোপুরি জানতে পারেননি এবং তা নিয়ে বর্তমানে গবেষণা চলছে। আর একটি ব্যাপার, ঘুমন্ত মানুষের চেহারার কোন এক অজানা অতিরিক্ত আবেগ অনুভূতি কাজ করে। যা তার গোপন এক প্রাকৃতিক নিরাপত্তা দেয়। দিনের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ঘুম হচ্ছে সেই সময় যখন আমরা আমাদের চারপাশ সম্বন্ধে অবহিত থাকি না। প্রধানত দু’ধরনের ঘুম হয় : ১। রেমঃ- রেম ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্ক সজাগ থাকে, আমাদের মাংসপেশি শিথিল থাকে, আমাদের চোখ এদিক থেকে ওদিকে ঘুরতে থাকে এবং আমরা স্বপ্ন দেখি। ২। নন রেমঃ- এই ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্ক নিষ্ক্রিয় থাকে, তবে শরীর নড়াচড়া করতে পারে। এই সময় হরমোন নি:সৃত হয় এবং দিনের ক্লান্তি দূর হয়ে শরীর আবার সতেজ হয়ে ওঠে। দুই অক্ষরের এই ঘুম কারো কাছে আদরের, কারো কাছে নিত্য সঙ্গী আবার কারো কাছে অশান্তির কারণ। কেউ দিনে ঘুমায়, কেউ রাতে ঘুমায় আবার কেউ দিনে-রাতে উভয় সময়ই ঘুমায়। যে যাই করুক না কেন শেষ পর্যন্ত ধরা দেয় মধুরতম শব্দ ‘ঘুম’ এর কাছেই। সকাল, বিকাল, দিন, রাত, সপ্তাহ, মাস, বছর, ঋতু, স্থান, কাল, পাত্র ভেদে ঘুমের কোন পরিবর্তন নেই। ঘুম আসবেই। যে ইনসোমনিয়ায় ভোগে সেও দিনে ঘুমিয়ে পুষিয়ে নেয়। ঘুম আসার কোন জাত বা ধর্ম নেই। কেউ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ঘুমায় আবার কারো কাছে দুর্লভ এটি। এই অমূল্য রত্নটি যাদের কাছে ধরা দেয় না সেই দলকে এই সোনার হরিণ লাভে ওষুধ খেতে হচ্ছে। অপর দল আবার ঘুম তাড়ানোর ওষুধের জন্য রিসার্চ করছেন।
ক্লাসে বসে হয়ত ম্যাডামের লেকচার মন দিয়ে শুনছেন, হঠাৎ নাছোড়বান্দা ঘুম এসে উপস্থিত। অমনি ঝিমুনি আর ঘুম। ম্যাডামের হাতে ধরা পড়ে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে সেরে নিতে হলো বাকী ঘুমটুকু।
ঘুমে হয়তো বা আপনি আপনার শত্রুর সাথে জীবন-মরণ লড়াই করছেন আর আপনার পাশের ঘুমন্ত প্রিয় বন্ধু আপনার লাথি গুঁতো খেয়ে এমনই বিরক্ত হয়েছেন যে আজ তার সাথে আপনার চিরকালের সম্পর্ক মিটে যাবে। ঘুমের ভেতরই আপনি স্বাদ পান কোটিপতি হওয়ার। আপনার যে ডাক্তার বন্ধুটি এটা খাবে না, ওটা খাবে না করে তিনিও কিন্তু আপনাকে পর্যন্ত ঘুমের লাইসেন্স দিয়েছেন। তো ঘুম নিয়ে এই প্যাঁচাল পেড়ে ক্যাঁচাল সৃষ্টি করে লাভ নেই, এতক্ষণ ঘুমিয়ে পড়েছেন নিশ্চয়ই!