সীতাকুণ্ডে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর দগ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড জোরবটতল এলাকার মুনসুর আহমদের নতুন বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূর নাম রোকসানা আক্তার (২৩)। তিনি ওই এলাকার আনোয়ার কিবরিয়ার স্ত্রী। এদিকে উদ্ধার করা দগ্ধ গৃহবধূর মাথা ও শরীরের বিভিন্নস্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তাই এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলছে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী, ভাসুর ও ভাসুরের স্ত্রীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের গোলাম কিবরিয়ার সাথে রোকসানার বিয়ে হয়। বর্তমানে তিনি ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। স্থানীয়রা জানান, গতকাল বিকালে রোকসানার অগ্নিদ্বগ্ধ মরদেহ নিজ ঘরে পড়ে আছে বলে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে ছুটে যান তারা। এ সময় তারা খাটের উপর গৃহবধূর নিথর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে বিষয়টি সীতাকুণ্ড থানা পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
স্থানীয়রা আরও জানান, একই বাড়িতে গোলাম কিবরিয়ার পরিবারের সাথে তার ভাইয়ের পরিবারও বসবাস করছেন। জায়গা–জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিলো। কিন্তু এই ঘটনা কীভাবে ঘটল তা কেউ বুঝতে পারছেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা এম.এইচ হেলাল বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখলাম অগ্নিদ্বগ্ধ লাশটি বিছানার উপর পড়ে আছে। তবে লাশের অবস্থা দেখে এ মৃত্যু রহস্যজনক বলে মনে হয়েছে। যদি গায়ে আগুন লাগত তাহলে মহিলাটি কিছুটা ছোটাছুটি করত কিংবা চিৎকার করত। কিন্তু কেউই তার কোনো চিৎকার শোনেনি।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ তোফায়েল আহমেদ বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কুপিয়ে হত্যা করে বিছানায় মরদেহ রাখা হয়েছে এবং হাঁটু থেকে মাথা পর্যন্ত লেপ জাতীয় মোটা কাপড় দিয়ে ঢেকে কোন দাহ্য পদার্থ দিয়ে আগুন লাগানো হয়েছে। তারা প্রথমে এটিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের আগুন বলে প্রচারের চেষ্টা করেন। তবে ঘটনার আলামতে আমার সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে সুরতহাল করার সময় লাশের মাথার পিছনে ধারালো বস্তুর আঘাতে অন্তত ৩ ইঞ্চি গভীর দুটি ক্ষত চিহ্ন পাওয়া যায়। তখন আমি নিশ্চিত হই এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী, ভাসুর ও ভাসুরের স্ত্রীকে থানায় আনা হয়েছে।