বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকাবস্থায় বসতঘর নির্মাণ করেন হোসনে আরা বেগম (৬০)। বর্তমানে তার ঘরের ভিতর রয়েছে খুঁটিটি। ঘরের চালার উপর বিপজ্জনকভাবে ঝুলছে উচ্চ ভোল্টেজের জীবন্ত তার। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন হোসনে আরাসহ আশেপাশের কয়েকটি পরিবার। গত বৃহস্পতিবার বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড জানালী মাঝির বাড়িতে আগুন লেগে ১৮টি ঘর পুড়ে যাওয়ার পর একই বাড়িতে হোসনে আরা বেগমের ঘরের ভিতর এই বৈদ্যুতিক খুঁটিটি সবার নজরে পড়ে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৭ বছর আগে এই একই বাড়িতে ১০টি ঘরে পুড়ে যায়। তবে বৈদ্যুতিক খুঁটি তখন ঘরের বাইরে ছিল। ঘর পুড়ে যাওয়ার পর আবার নতুন করে ঘর বাধার সময় বাড়তি ঘর তৈরি করায় বৈদ্যুতিক খুঁটিটি হোসনে আরা বেগমের ঘরের ভিতর ঢুকে পড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হোসনে আরা বেগমের সামনের রুমের ভিতরে টিনের ছাউনি ভেদ করে দাঁড়িয়ে আছে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি। তারগুলো অরক্ষিত অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চালার উপরে এদিক–সেদিক। ঘনবসতিপূর্ণ বাড়িটির সবার ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে এই খুঁটি থেকে। হোসনে আরা বেগম বলেন, আমার ঘর তৈরি করার সময় খুঁটি ঘরের ভিতর চলে আসে। খুঁটি সরানোর কথা কাউকে লিখিতভাবে বলা হয়নি। কোথায় কিভাবে বলতে হবে এসব আমরা জানি না।
স্থানীয়রা বলেন, খুঁটি ঘরের বাইরে নিয়ে আসা প্রয়োজন। একবার আগুন লেগেছে এখানে। খুঁটির কারণে বারবার আগুন লাগতে পারে। বারবার ঘর বাধা কারো পক্ষে সম্ভব না। একটি খুঁটির জন্য বড় বিপদ আসতে পারে আমাদের। স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শীমুল শীল বলেন, ঘরের ভিতর বৈদ্যুতিক খুঁটি। বাড়ির টিনের উপর তারগুলো দেখলেও ভয় লাগে। একবার সাত বছর আগে সে জায়গায় ঘর পুড়েছে। এই বৈদ্যুতিক খুঁটির কারণে আবারো বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন লাগতে পারে যেকোনো সময়। বৈদ্যুতিক খুঁটিটি অন্যত্র সরানো খুবই প্রয়োজন।
কধুরখীল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিউল আজম শেফু বলেন, ঘরের ভিতর বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকা উচিত নয়। যেকোনো সময় বিপদ আসতে পারে। আমি নিজেও বিষয়টি পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি।
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি–১ এর বোয়ালখালীর ডেপুটি জোনাল ম্যানেজার স ম মিজানুর রহমান বলেন, খুঁটি ঘরের বাইরে ছিল। তারাই খুঁটিকে ঘরের ভিতর ঢুকিয়েছে। কেউ যদি নিজে থেকে ঝুঁকি তৈরি করে তাহলে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়। এরপরেও যদি ঘরের ভিতর থেকে খুঁটি সরাতে চায় তাহলে তাদেরকে খরচ বহন করতে হবে। তারা খরচ বহন করলে আমাদের লোকজন গিয়ে খুঁটি সরিয়ে দিবে।