চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারি এলাকার বিএম কন্টেনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম কাস্টমস, বন্দর কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ও সিভিল সার্জন পৃথক পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। গতকাল রোববার দিনের বিভিন্ন সময় এসব কমিটি গঠন করা হয়। জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (স্থানীয় সরকার) বদিউল আলমকে।
কমিটির বাকি ছয় সদস্য হলেন সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম, সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম শিল্প অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দীন, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সজীব কুমার চক্রবর্তী, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর উপ-মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল সাকিব মুবাররাত, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন সিকদার, বিস্ফোরক পরিদর্শক মো. তোফাজ্জল হোসেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান বলেন, ‘প্রতিটি সংস্থার সদস্যের সমন্বয়ে এই কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটি আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিবেন। ফায়ার সার্ভিসও সাত সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। যেখানে পরিচালক (প্রশিক্ষণ,পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিমকে প্রধান এবং চট্টগ্রাম বিভাগের উপ পরিচালক মো. আনিছুর রহমানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। উপ পরিচালক শাহজাহান সিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কমিশনার ফখরুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। এ কমিটি আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবেন, এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ফখরুল আলম বলেন, বিএম ডিপোতে আগুন লাগার ঘটনা কিভাবে ঘটলো তা তদন্তের জন্যই এ কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে কাস্টমসের একজন সিনিয়র ডেপুটি কমিশনারকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরির্দশন শেষে একটি কমিটি করেন। কমিটিতে টার্মিনাল ম্যানেজারকে আহ্বায়ক, উপ-পরিচালক (নিরাপত্তা), ও কাস্টমসের একজন প্রতিনিধিকে সদস্য করা হয়েছে। এ কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ প্রদান করা হয়।
বিস্ফোরণের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরও।
কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শন পূর্বক তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক শিপন চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে শ্রম পরিদর্শক (স্বাস্থ) শুভংকর দত্তকে। আরেক সদস্য হলেন শ্রম পরিদর্শক (নিরাপত্তা) মো. শামীম হোসেন। অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক (চলতি দায়িত্ব) আব্দুল্লাহ আল সাকিব মুবাররাতের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে তদন্ত কমিটি গঠনের এ কথা বলা হয়েছে। মর্মান্তিক এ ঘটনা মোকাবেলায় ৫ সদস্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক মনিটরিং কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয়। এতে চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খানকে আহ্বায়ক করা হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রামের এমওসিএস ডা. মোহাম্মদ ওয়াজেদ চৌধুরীকে ফোকাল কর্মকর্তা, জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া ও সীতাকুণ্ডের ভারপ্রাপ্ত পরিসংখ্যানবিদ উশ্রী দাশ গীতাকে সদস্য এবং সংযুক্ত সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রধান সহকারী এস, এম সাহিদুল ইসলামকে দাপ্তরিক সমন্বয়ক করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
