ঘটনাবহুল ম্যাচে ভুটানকে সহজে হারাল বাংলাদেশ

শান্তি মার্ডির হ্যাটট্রিক

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বুধবার , ১৬ জুলাই, ২০২৫ at ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের ফুটবল মাঠে বিরল ঘটনা ঘটল। সাফ অনূর্ধ্ব২০ নারী টুর্নামেন্টে বাংলাদেশভুটান ম্যাচ অনেক ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইল। ম্যাচের মধ্যবিরতির পর কিংস অ্যারেনায় খেলা শুরু হয়নি মাঠ অনুপযুক্ত থাকায়। পৌনে ৩ ঘণ্টা পর কিংস অ্যারেনার অনুশীলন মাঠে খেলার দ্বিতীয়ার্ধ অনুষ্ঠিত হয়। ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৪১ গোলে ভুটানকে পরাজিত করেছে। ফুটবলে বডিলি শিফট, খেলা বিলম্ব অনেক ঘটনাই ঘটে থাকে। বাংলাদেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ এক ভেন্যুতে শুরু হয়ে আরেক ভেন্যুতে শেষ হওয়ার কীর্তি কেউ এখন পর্যন্ত মনে করতে পারেনি। এমন বিরল কীর্তি বিশ্ব ফুটবলেও হয়তো কদাচিৎ। এমন ঘটনাবহুল ম্যাচটি বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা মনে রাখবে দীর্ঘদিন। ম্যাচের প্রথমার্ধে শান্তি মারডির গোলে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল। বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার এই ম্যাচের একাদশে পরির্তন এনেছিলেন। ফলে শক্তিমত্তায় পিছিয়ে থাকায় খেলার প্রভাবে পরিবর্তন ছিল। পাশাপাশি মাঠ বৃষ্টিতে অনেক ভারী হওয়ায় বাংলাদেশভুটান কেউই স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেনি।

দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর সময় রেফারি খেলা আধ ঘণ্টা বিলম্ব শুরুর সিদ্ধান্ত নেন। রেফারি ও ম্যাচ কমিশনার আধ ঘণ্টা পর মাঠ পর্যবেক্ষণ করে খেলা শুরুর মতো মনে করেননি। কিংস অ্যারেনার গ্রাউন্ড স্টাফরা প্রাণান্ত চেষ্টা করেও মাঠ খেলার উপযোগী করতে পারেননি। বাইলজ অনুযায়ী ম্যাচ দুই দফা আধ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থগিত করা যায়। এরপর বিষয়টি চলে যায় টুর্নামেন্ট কমিটির কাছে। বাংলাদেশ ও ভুটান দুই দলের সঙ্গে ম্যাচ এক ঘণ্টা বিলম্ব হওয়ার পর মিটিং হয়। সেই মিটিংয়ে দুই দলই গতকাল খেলা শেষ হওয়ার পক্ষে মত দেয়। কিংস অ্যারেনা স্টেডিয়ামের পাশেই কিংস অ্যারেনার অনুশীলন মাঠ রয়েছে। সেই মাঠটি খেলার উপযুক্ত থাকায় সেখানে পৌনে ৭টায় খেলা শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। দুই দলের খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ, টিভি সমপ্রচার ক্যামেরা ও দর্শক সবাই স্থানান্তরিত হন। অনুশীলন মাঠ ফলে দর্শক গ্যালারি নেই। দর্শকরা মাঠের চারপাশে বেড়ার পেছনে দাঁড়িয়ে খেলা উপভোগ করেন।

গতকাল একাদশে ৯ পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশ শুরুতে সুবিধা করতে পারছিল না। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি তৃষ্ণা রানি সরকার। সপ্তম মিনিটে তার শট ভুটান গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দিলেও ফিরতি শটে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন শান্তি মার্ডি। সেই এক গোল নিয়েই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে ভিন্ন মাঠে খেলা শুরু হওয়ায় দুই দলের খেলাতেই ভিন্নতা দেখা যায়। শুরুতেই ৫৩ মিনিটে গোল শোধ করে সমতায় ফেরে ভুটান। সাংগাই ওয়াংমোর গোলে ফেরার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে তারা। তবে তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে দেন শান্তি মার্ডি। প্রথমার্ধে দলকে এগিয়ে দেওয়া এই ফুটবলার দ্বিতীয়ার্ধে জোড়া গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন। শান্তির দ্বিতীয় গোলটি আসে কর্নার থেকে। ৭৬তম মিনিটে বদলি নামা মুনকি আক্তার স্বাগতিকদের তৃতীয় গোল উপহার দেন। একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে বাঁ দিক দিয়ে ঢুকে মুনকি গোলকিপারের পাশ দিয়ে নিখুঁত ফিনিশ করেন। ৭৯ মিনিটে শান্তি মার্ডি হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন। সতীর্থের ক্রসে শান্তি বঙে ঢুকে জোরালো শটে জাল কাঁপান। আর তাতে বড় জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। তিন ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই আছে বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামবে নেপাল। এই ম্যাচটিও বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনার অনুশীলন ভেন্যুতে আয়েজিত হবে। নারী সাফ অনূর্ধ্ব২০ টুর্নামেন্টে চার দল একে অন্যের সঙ্গে ২ বার করে মুখোমুখি হবে। ৬ ম্যাচ শেষে টেবিলে শীর্ষ পয়েন্টধারী দল চ্যাম্পিয়ন হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবন্দর অবকাঠামো উন্নয়নে সিঙ্গাপুরকে বিনিয়োগের আহ্বান নৌপরিবহন উপদেষ্টার
পরবর্তী নিবন্ধসিরিজ জিতে ফিরতে চায় বাংলাদেশ