চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ বৃক্ষরোপণে ২০২৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে ১ম স্থান অর্জন করেছে। আজ পরিবেশ দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পুরস্কার প্রদান করবেন। চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল মুজিবুল হক সিকদার এ পুরস্কার গ্রহণ করবেন। গ্রিন ক্যাম্পাস হিসেবে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ দেশব্যাপী বেশ সুখ্যাতি অর্জন করেছে।
চট্টগ্রাম সেনানিবাসে অবস্থিত এই বিদ্যাপীঠে রয়েছে ২০ একরের বিশাল নয়নাভিরাম সবুজ ক্যাম্পাস। দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন বনজ, ফলজ, ভেষজ, শোভাবর্ধনকারী ও দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক জ্ঞান দেওয়া, বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ সংরক্ষণ, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং শিক্ষার্থীদের পরিবেশ বিপর্যয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধির ফলে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব আগ্রাসীরূপ ধারণ করেছে। ফলে নানাবিধ ক্ষতির সঙ্গে বাড়ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যেকোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পরিবেশকে সবার আগে গুরুত্ব দেয়া উচিত। কেননা, প্রকৃতিকে উপেক্ষা করে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে সচেতন ও পরিবেশপ্রেমী করতে এ প্রতিষ্ঠানে রয়েছে ছাত্র–ছাত্রীদের দ্বারা পরিচালিত গ্রিন ক্লাব। ক্লাবটির মাধ্যমে বছরব্যাপী ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন বিলুপ্তপ্রায় বনজ, ফলজ, ভেষজ ও শোভাবর্ধনকারী উদ্ভিদের চারাগাছ রোপণ করা হয়। সুবিশাল এই ক্যাম্পাসকে বিভিন্ন ব্লকে বিভক্ত করে বৈজ্ঞানিকভাবে রোপণ করা হয়েছে ৩০০ প্রজাতির প্রায় ৪৫,০০০ উদ্ভিদ। এই বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদরাজি ক্যাম্পাসকে পরিণত করেছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর বাসযোগ্য ও নিরাপদ অভয়ারণ্যে।
এই ক্যাম্পাসে নিরাপদে বিচরণ করে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী। সবুজ এই ক্যাম্পাসে আছে গুইসাপ, সজারু, অজগর, কচ্ছপ, বন্যশূকর, শিয়াল, বক, শালিক, চিল, ব্যাঙ, টিয়া, বানর, বাদুড়, বেজি, কাঠঠোকরা, দোয়েল, ঘুঘু, পেঁচা, ফিঙে, বনবিড়াল, বনমোরগ, ডাহুক, কোকিল, কাঠবিড়ালি এবং বিভিন্ন প্রজাতির বাগান গিরগিটিসহ নানাবিধ প্রাণী। প্রায়ই পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে আসে মায়া হরিণ।
শিক্ষার্থীদের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় নতুন শিক্ষাক্রম ২০২৩ এ প্রকৃতি, পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের স্কাউট, রোভার, গার্ল গাইডস, রেঞ্জার, রেডক্রিসেন্ট, বিএনসিসি, হলদে পাখিসহ মোট ২৮টি ক্লাব কার্যক্রমে বৃক্ষরোপণ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।