গ্রাহক সেবা বন্ধ রেখেই অনুষ্ঠিত হয়েছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডে (কেজিডিসিএল) সিবিএ নির্বাচন। নির্বাচনের কারণে চট্টগ্রামে গ্যাসের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ের প্রবেশ ফটকের দেয়ালে দেয়ালে সাঁটানো হয়েছে নোটিশ। তবে অদ্ভূতুড়ে ওই নোটিশ সম্পর্কে জানতেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও।
অভিযোগ রয়েছে, সিবিএ নির্বাচনের কারণে হালিশহর ও ফৌজদারহাট জোন অফিস থেকে প্রতিষ্ঠানের গাড়িতে করেই কর্মচারীরা প্রধান কার্যালয়ে ভোটে দিতে এসেছেন। এ নিয়ে কর্মকর্তাদের অনেকে পরোক্ষভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও গণমাধ্যমে মুখ খুলতে রাজি হননি। একাধিকার ফোন করে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জানা যায়, বৃহস্পতিবার কেজিডিসিএল সিবিএ নির্বাচন-২০২০ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে দুটি প্যানেল অংশ নেয়। দুটোই সরকারি দল সমর্থিত হলেও আলাদাভাবে নিবন্ধিত। নিয়মমাফিক সিবিএ নির্বাচন চললেও প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক সেবা স্বাভাবিক নিয়মে চলার কথা। কিন্তু প্রিপেইড রিচার্জ বুথ বাদে সব ধরণের সেবা বন্ধ রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। সকাল থেকে প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে দায়িত্বরত নিরাপত্তারক্ষীরা সাধারণ গ্রাহকদের প্রবেশে বাধা দেন। মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক সিকিউরিটি গার্ড বলেন, ‘ভিতরে নির্বাচন চলছে। নোটিশ দেওয়া আছে, বাইরের কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।’ প্রবেশ পথের দেওয়ালে সাঁটানো বড় অক্ষরে লেখা ওই “নোটিশ”-এ উল্লেখ করা হয়, “কেজিডিসিএল এর প্রধান কার্যালয় চট্টগ্রাম এ আগামী ২৬/১১/২০২০ তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি (সিবিএ) নির্ধারণী নির্বাচন-২০২০ অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত তারিখে সকাল ৯.০০ ঘটিকা হতে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোম্পানীর প্রধান কার্যালয়ের ফটক বন্ধ থাকবে এবং অফিস অভ্যন্তরে কোম্পানীতে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারী ব্যতিত গ্রাহক ও ঠিকাদারসহ বাহিরের লোকজন প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষেধ করা হল। বি: দ্র: গ্যাসের রিচার্জ করতে আসা সেবা গ্রহীতাদেরকে প্রধান ফটকে কর্মরত নিরাপত্তাকর্মীদের মাধ্যমে ভিতরে প্রবেশ এবং রিচার্জ কার্যক্রম সম্পন্ন শেষে বাহির হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আদেশক্রমে কর্তৃপক্ষ।” ওই নোটিশে কারো স্বাক্ষর ছিল না। ছিল না প্রতিষ্ঠানের সূত্র নম্বরও।
বাইরের মানুষ কিংবা গ্রাহকদের ষোলশহর প্রধান কার্যালয়ে প্রবেশে বাধার বিষয়ে জানতে চাইলে কেজিডিসিএল’র মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ফিরোজ খান বৃহস্পতিবার পৌনে তিনটায় দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘আমাদের এখানে সিবিএ নির্বাচন চলছে। নির্বাচনের কারণে বাইরের লোকজন প্রবেশরোধ করতে আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল। তবে প্রিপেইড মিটার রিচার্জ করার কাজটি চলছে।’ প্রধান কার্যালয়ে প্রবেশ পথে সাঁটানো দুটি নোটিশের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি প্রতিবেদককে উল্টো প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন- “কোন নোটিশ।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ থেকে অফিসিয়াল কোনো নোটিশ জারি করা হয়নি।’ সিবিএ সংশ্লিষ্টরা কম্পিউটার টাইপে এই ধরণের নোটিশ ছাপিয়ে সাঁটাতে পারে বলে মন্তব্য এ কর্মকর্তার।
এ ব্যাপারে জানতে কেজিডিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী খায়েজ আহমদ মজুমদারের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।