গ্যাস সংকটের প্রভাব বিদ্যুতে

কমেছে এলএনজি আমদানি গরমের সাথে বেড়েছে লোডশেডিং, দুর্ভোগ

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৯ অক্টোবর, ২০২২ at ৬:৩৪ পূর্বাহ্ণ

এলএনজি আমদানি কমে গেছে। এতে চট্টগ্রামের দুটি সার কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হলেও গ্যাস সেক্টরে সুফল মিলছে না। গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন বন্ধ থাকায় চট্টগ্রামের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে না। ভোর রাতেও লোডশেডিং করে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্যাস ও বিদ্যুৎ নিয়ে সংকট তীব্র হচ্ছে।
সূত্রে জানা যায়, দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হচ্ছে। দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করা হচ্ছিল। গত মাসেও দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি হয়। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও ডলার সংকটে মূল্যবৃদ্ধিসহ আন্তর্জাতিক সংকটে এলএনজি আমদানির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। ফলে গত ক’দিন ধরে দৈনিক ৩৮০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে, যা দেশের গ্যাস সরবরাহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, চট্টগ্রামের বহুজাতিক সার কারখানা কাফকো গত ৫ অক্টোবর থেকে সার উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। বেশ আগে থেকে বন্ধ রয়েছে সিইউএফএল। এই দুটি সার কারখানা দৈনিক প্রায় ১শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ব্যবহার করত। উৎপাদন বন্ধ থাকায় ১শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সাশ্রয় হচ্ছে। কিন্তু এলএনজি আমদানি কমে যাওয়ায় এই সাশ্রয় কাজে লাগছে না। অবশ্য বর্তমান প্রেক্ষাপটে কাফকো ও সিইউএফএল উৎপাদনে গেলে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করবে। এই দুটি কারখানা একই সাথে চালানোর মতো গ্যাস চট্টগ্রামে যোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে কাফকোর উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের খবর পেয়ে সিইউএফএল উৎপাদন শুরু করার জন্য ২৬ সেপ্টেম্বর কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডকে চিঠি দেয়। তারা সার উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাস দেয়ার আবেদন জানায়। কিন্তু কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানি নিজেরা সিদ্ধান্ত না নিয়ে সিইউএফএলের আবেদনপত্রটি পেট্রোবাংলার কাছে পাঠায়। গতকাল পর্যন্ত পেট্রোবাংলা থেকে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া হয়নি।
গতকাল চট্টগ্রামে ২০৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেয়া হয়। এর মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেয়া হয়েছে মাত্র ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট। রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দিয়ে শিকলবাহা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন চালানো হচ্ছে। চট্টগ্রামে গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন সংকট থাকায় ভোর রাতেও শহরে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। তীব্র গরমের মাঝে রাতে-দিনে লোডশেডিং করায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের শীর্ষ একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এলএনজি আমদানি বৃদ্ধি কিংবা দেশে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব না হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। গ্যাস ও বিদ্যুৎ নিয়ে সংকট ক্রমে তীব্র হচ্ছে। আগামী এক বছরে পরিস্থিতির উন্নতির কোনো আশা দেখা যাচ্ছে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রাক-প্রস্তুতি
পরবর্তী নিবন্ধযান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে যেসব স্থানে