প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম কমাতে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোর জন্য আগামী পাঁচ থেকে ১০টি শীতকাল ভয়াবহ রূপ নিয়ে আসবে বলে সতর্ক করেছেন বেলজিয়ামের জ্বালানিমন্ত্রী। টুইটারে এক বার্তায় জ্বালানিমন্ত্রী টিন ভন দার স্ট্রাটেন বলেন, ইউরোপে অবিলম্বে গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে সীমা বেঁধে দেয়া উচিত। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির মধ্যে যে যোগসূত্রের কথা বলা হচ্ছে তা কৃত্রিম এবং সেটিরও সংস্কার করা দরকার বলে মনে করেন তিনি। খবর বিডিনিউজের। স্ট্রাটেন বলেন, যদি আমরা কিছু না করি তবে আগামী পাঁচ থেকে ১০টি শীতকাল ভয়ঙ্কর হবে। আমাদের অবশ্যই (জ্বালানির) নতুন উৎস নিয়ে কাজ করতে হবে, সেটি ইউরোপীয় পর্যায়ে এবং গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি আটকাতে কাজ করতে হবে। শুধু গ্যাস নয় বরং ইউরোপ জুড়ে বিদ্যুতের দামও পাগলা ঘোড়ার মত ছুটছে। এ সপ্তাহে বিদ্যুতের দামের নতুন রেকর্ড হয়েছে। ফলে ইইউজুড়ে গ্যাসের দামের মূল্যবৃদ্ধি রোধ এবং গ্যাসের কারণে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি ঠেকানোর ডাক উঠেছে। ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল সরবরাহকারী দেশ রাশিয়া। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং তার জেরে পশ্চিমা বিশ্ব দেশটির উপর নানা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে অস্ত্র হিসেবে গ্যাসকে ব্যবহার করছে রাশিয়া। তারা পাইপলাইন দিতে ইউরোপে গ্যাস রপ্তানি অর্ধেকের বেশি কমিয়ে দিয়েছে।
ওদিকে, যুদ্ধে ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়া দেশগুলোও রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি তেল ও গ্যাস আমদানি কমানোর চেষ্টা করছে।
বিবিসি জানায়, গত বছরও ইউরোপে গ্যাসের মোট চাহিদার ৪০ শতাংশের যোগ দিয়েছিল রাশিয়া। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ তেল ও গ্যাস রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া। কিন্তু দেশটিকে যুদ্ধ করা থেকে বিরত রাখতে পশ্চিম বিশ্ব রুশ অর্থনীতি ধ্বংসের পরিকল্পনায় সে দেশ থেকে তেল ও গ্যাস আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়েছে বিশ্ব বাজারে। বিশ্বের প্রায় সব দেশকেই এখন তেল ও গ্যাসের অভাবে ভুগতে হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দাম লাগামছাড়া হয়ে গেছে।
বিশ্বজুড়ে এখনো বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার অনেক বেশি। আর যেহেতু গ্যাসের দাম বাড়ছে তাই বিদ্যুতের দামও বাড়ছে। ইইউভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি ২০২০ সালে রাশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি গ্যাস আমদানি করেছে। রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ অনেক কমে যাওয়ায় এখন দেশটি শীত আসার আগে প্রাণপণে গ্যাসের মজুদ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তারা অক্টোবরের মধ্যে তাদের গ্যাসের মজুদ ৮৫ শতাংশে উন্নিত করতে চাইছে। দেশটি জ্বালানি সাশ্রয়ে নানা ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে।