সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থী ছাড়াও সর্বস্তরের জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ‘দমন–পীড়ন’ বন্ধ করে কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সংঘটিত ‘গণহত্যা’ ও নির্যাতনের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বানও জানিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেছেন, জাতিসংঘসহ দেশ বিদেশের কারও কথা কর্ণপাত না করে সরকার হত্যা, নিষ্ঠুর হামলা, নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। শুধু হামলাই নয়, তারা শিক্ষার্থীদের ডাকা গণমিছিলে কর্মসূচি বানচাল করতে ফেসবুক, টেলিগ্রামসহ সামাজিক গণমাধ্যমের বিভিন্ন সাইট তারা বন্ধ করে দেয়। এসব করেও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ তারা ঠেকাতে পারেনি। দেশের জনগণ এই সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। প্রাকৃতিক ও সরকারি প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে সারা দেশে লাখ লাখ শিক্ষার্থী ছাড়াও শিক্ষক–অভিভাবকসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ সম্মিলিতভাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে গণমিছিলে অংশ নিয়ে প্রমাণ করেছে যে, সমগ্র দেশ আজকে প্রাণঘাতী স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে একাট্টা।
গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে একথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। এদিন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ডাকা গণমিছিলের কর্মসূচিতে ‘পুলিশ ও সরকার দলীয় হামলার’ অভিযোগ তুলে নিন্দা জানান তিনি।
গেল জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় দুই শতাধিক মানুষের প্রাণ গেছে। সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে কোটা সংস্কার করলেও এখন হত্যাকাণ্ডের বিচার ও গ্রেপ্তারের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনে সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আন্দোলন কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ডাকে গতকাল সারা দেশে গণমিছিলের কর্মসূচি পালিত হয়। রাজধানীর উত্তরা ও সায়েন্স ল্যাবরেটরিসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ–কর্মসূচিতে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে হবিগঞ্জে গুলিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। খুলনায় নিহত হয়েছেন এক পুলিশ সদস্য।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পদত্যাগ দাবি করে বিবৃতিতে বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সন্ত্রাসীরা ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা চালায়। হবিগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলায় নিরীহ শ্রমিক মুশতাক মিয়া নিহত হন এবং অসংখ্য নিরীহ মানুষ আহত হয়েছেন। সিলেটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে অসংখ্য মানুষকে আহত করে। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দৈনিক কালবেলার সিলেট ব্যুরোর সংবাদদাতা মিঠু দাস জয় গুলিবিদ্ধ হন। উত্তরায় পুলিশ এবং আওয়ামী ক্যাডাররা গুলি ছুড়ে আহত করেছেন শিক্ষার্থীদের। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা সেখানে নারী শিক্ষার্থীদেরকে একটি বাসায় আটকে রাখে। নরসিংদীতে ছাত্রীদের মিছিলে মহিলা আওয়ামী লীগের কর্মীরা হামলা চালায়। এভাবে সারা দেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নির্মম, নৃশংসতা অব্যাহত রেখেছে। বিবৃতিতে নিপীড়ন বন্ধ করে গ্রেপ্তারদের মুক্তির দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।