অধিকাংশ গৃহিণী একটা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। আপনি কি জব করেন? এই কথার সম্মুখীন নিশ্চয় হয়েছেন বেশিরভাগ গৃহিণী। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সংসার সামলানোর জন্য হয়তো অনেকে বাইরে কাজ করতে পাড়ে না। আর যখন তারা ঐ প্রশ্নের সামনে পরে তখন হয়তো মনটা খারাপ ও ছোট হয়ে আসে। আর সে জন্য সংসারকে দায়ী করতে থাকে এবং সংসারের প্রতি ধীরে ধীরে বিরূপভাব চলে আসে। আমরা এমনও দেখেছি অনেক চাকরিজীবী নারী ভালো পজিশনের জব ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন সন্তানের দেখাশোনা ও সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য। যেখানে তারা সম্পূর্ণ নিশ্চিত না এখনকার সময়ে সন্তানেরা পরবর্তীতে আদৌ কতটা দায়িত্ব পালন করবে। তবুও রক্তের টানে ছাড় দিচ্ছে এই প্রজন্মের মায়েরা। যেটাই হোক আমরা কি কখনো ভাবি ঘরের সার্ভিসটা বাইরের কাজ থেকে কতটা মূল্যবান? সমস্ত শ্রম, শক্তি ও ভালোবাসা দিয়ে নিজেদের সংসার গড়া! ঘরের সার্ভিসে কখনো বেতন, বোনাস, অবসরকালীন ভাতা, ছুটি ও এমনকি অবসর না থাকা সত্ত্বেও নিরলস সংসারের জন্য সেবা দিয়ে যাচ্ছেন গৃহিণীরা। এই সেবা কতটা মহৎ ও নিঃস্বার্থ। ৩৬৫ দিন এভাবে মায়া মমতা দিয়ে সেবা দিয়ে থাকেন এবং সারা জীবন দিয়ে যান। গৃহিণীরা একজন বিশ্বস্ত সেবিকা, শিক্ষিকা, রাঁধুনি এবং পরিচারিকাসহ একাধারে সব পেশা পালন করছেন সংসারের জন্য। এই সেবা পৃথিবীর সমস্ত সেবার উর্ধ্বে যা কোনো কিছুর বিনিময়ে মূল্যায়ন করা যায় না। এরপরেও আমাদের সমাজে গৃহিণীদের কাজকে সম্মানের সাথে স্বীকৃতি দিতে চায় না। এরকম দৃষ্টিভঙ্গীর জন্য গৃহিণীরা সংসারের প্রতি নিরুৎসাহিত হচ্ছে এবং হতাশায় ভুগতে থাকে। অন্যান্য পেশার মতো গৃহ শ্রমের পারিশ্রমিক পাওয়ার নিয়ম থাকলে হয়তো গৃহিণীরাও পেশাগত সম্মান ও মূল্যায়ন পেতো। যদিও এই সেবার মূল্য কোনোকিছুর বিনিময়ে দেয়া যাবে না। নতুবা পাশ্চাত্য দেশের মতো হাসবেন্ড ওয়াইফ ঘরের কাজ এবং বাইরের কাজের দায়িত্ব সমান ভাবে ভাগ করার নিয়মটা হলে তখন গৃহিণীরা কাজের বৈষম্যে পড়তো না। তবে সবকিছুরই সম্মান আসে সংগ্রামের মাধ্যমে। হয়তো একদিন গৃহিণীরা সম্মান ও স্বীকৃতি সবই পাবে।