গুয়া ধান কী বিলুপ্ত হয়ে যাবে?

মীরসরাই প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৭ জানুয়ারি, ২০২২ at ৫:০৫ পূর্বাহ্ণ

সময়ের পরিক্রমায় হারিয়ে যেতে বসেছে প্রাচীণ জনপদ মীরসরাই উপজেলার গ্রামীণ ঐতিহ্যের সুগন্ধি ‘গুয়া ধান’ (কালোজিরা ধান)। বেশি খরচ, কম লাভের কারণে এই ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন উপজেলার প্রান্তিক কৃষকরা। বিকল্প হিসেবে আবাদ করেছেন বি-ধান ৪৩। কৃষি বিভাগের মাধ্যমে এই এই জাতের ধান আবাদে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা বা প্রদর্শনী প্লট প্রকল্প গ্রহণ করলে বিলুপ্তির হাত থেকে তা ফেরানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
জানা যায়, কালোজিরা ধান স্থানীয় ভাষায় ‘গুয়াধান’ হিসেবে বেশ পরিচিত। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এই ধানের স্থান দখলে নিয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানগুলো। এই সুগন্ধি চিকন চাল দিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানে তৈরি হতো পিঠা-পুলি, পোলাও, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, ক্ষির, পায়েস, ফিরনি ও জর্দাসহ আরো সুস্বাদু মুখরোচক নানা ধরনের খাবার। কিন্তু এ সবই এখন স্মৃতি হতে বসেছে। এই ধান কাটার সময়কে ঘিরে গ্রামবাংলায় মেতে উঠত নবান্নের উৎসব। সেসব এখন অনেকটা অতীত। বীজের অভাব, সার, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিসহ নানান কারণে হারিয়ে যাচ্ছে এ সুগন্ধি ধানের চাষাবাদ।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, ১৬টি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌরসভায় প্রায় অর্ধলক্ষ কৃষক পরিবার রয়েছে। এ বছর ও প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করেছেন কৃষকরা। কৃষক মহিউদ্দিন জানান, এক সময় প্রত্যেক কৃষক আমনের পাশাপাশি কম বেশি গুয়াধান চাষ করত। এখন হাতেগোনা কিছু কৃষক নিজেদের খাবার জন্য কিছু জমিতে কালোজিরা ধান চাষ করেন। আগ্রহ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এই ধানের ফলন অন্য ধানের চেয়ে অনেক কম। যে জমিতে আমন চাষ করে ৫ টন ধান পাওয়া যায় সে পরিমাণ জমিতে কালোজিরা ৩ টনও পাওয়া যায় না। উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার নুরুল আলম বলেন, কালোজিরা ধান তুলনামূলক ফলন কম হওয়া কৃষকরা এই ধান আবাদে দিনে দিনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এখন অনেকে বি-ধান ৩৪ নামক ধানটি চাষাবাদ করছে। তবে এই ধান ও গ্রামীণ জনপদ থেকে শহরে বন্দরে অনেক কদর। কয়েকগুন বেশী দাম দিয়ে ও কিনছে অনেকে। তাই এই ধানের ও চাষ বৃদ্ধি প্রয়োজন। কৃষি সুপারভাইজার আরো জানান আগামীতে কৃষকদের এই বিষয়ে ও প্রণোদনা প্রদান করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কিশোর নিহত
পরবর্তী নিবন্ধপঞ্চম ধাপে এসে নৌকাকে পেছনে ফেলল স্বতন্ত্র