গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন জবির সহকারী প্রক্টর

অবন্তিকার আত্মহত্যা

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ২০ মার্চ, ২০২৪ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় রিমান্ড শেষে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একদিনের রিমান্ড শেষে দ্বীন ইসলামকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের ১ নম্বর আমলি আদালতে হাজির করা হয়। তখন বিচারক আবু বক্কর সিদ্দিক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলে জানান কুমিল্লা কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন।

একই মামলার আসামি অবন্তিকার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানের দুদিনের রিমান্ড চলছে। আজ বুধবার রিমান্ড শেষে তাকেও আদালতে হাজির করবে পুলিশ। খবর বিডিনিউজের।

ওসি ফিরোজ হোসেন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে দ্বীন ইসলাম কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। আমরা সেগুলো যাচাইবাছাই করে দেখছি। প্রয়োজনে আরও রিমান্ড চাওয়া হতে পারে।

শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা শহরের বাগিচাগাঁও ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন এলাকায় নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এর আগে নিজের ফেইসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তার এমন মৃত্যুর জন্য সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে দায়ী করেন।

অবন্তিকার অভিযোগ নিয়ে প্রক্টর অফিসের অবহেলার তদন্ত হবে : অবন্তিকার অভিযোগকে গুরুত্ব না দেওয়ায় প্রক্টর অফিসকে জবাবদিহি করা হবে বলে জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম। তিনি বলেছেন, অবন্তিকা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রক্টর দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করে। দপ্তরের কে সেটা গুরুত্ব দিয়েছে, কে দেয়নি তার সবকিছু তদন্ত কমিটি বের করবে। কেন তার অভিযোগকে অবহেলা করা হলো, তারও জবাব দিতে হবে। আমি শুধু আমার শিক্ষার্থীদের কাছে মাফ চাই, আর কারো কাছে মাফ চাই না।

গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে আইন বিভাগ আয়োজিত অবন্তিকার স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, অনেকেই আমাকে বলেছে, এত তাড়াতাড়ি আপনি কেন সাময়িক বহিষ্কার করলেন? কারণ সাময়িক বহিষ্কার না করলে তদন্ত সঠিক পথে আগায় না। তখন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল, তাই করেছি। একটি তদন্ত একদিনে হয় না। তদন্তের খুঁটিনাটি উঠে আসবে এই তদন্তে। আইন বিভাগের তার সহপাঠীদেরও ডাকা হবে। যারা তাকে হলে দেখেছে, মেসে দেখেছে, তাদের সবার সাক্ষ্য নেওয়া হবে।

অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে শনিবার ৫ সদস্যের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে সেই কমিটি যাতে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয় সেদিকে নজর রাখবেন বলে জানান অধ্যাপক সাদেকা। শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেদের অভিযোগ জানাতে পারে, সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় অবহেলায় পড়ে থাকা অভিযোগ বক্সগুলোকে সংস্কার করতে ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে নির্দেশ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপাচার্য।

অবন্তিকার আত্মহত্যা একটি ঘুণে ধরা কাঠামো ব্যবস্থার ফল : অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে মানববন্ধন হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। গতকাল বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনের সড়কে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে এ মানববন্ধনে শিক্ষকশিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

এ সময় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম বলেন, অবন্তিকার এই ঘটনাকে শুধুমাত্র আত্নহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে না; এটি একটি হত্যাকাণ্ড। একটি ঘুণে ধরা কাঠামো ব্যবস্থার ফলাফল। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। ঢাবির নাদির জুনাইদ, জাবির মাহমুদুর জনি, জবির দ্বীন ইসলাম একই সূত্রে গাঁথা। এটিকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে বিচার করলে আবার কিছুদিন পর অবন্তিকার মতো অন্য কাউকে আত্মাহুতি দিতে হবে। সুতরাং মুক্তির জন্য এই ঘুণে ধরা কাঠামোকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচবির ‘ডি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ, পাসের হার ৩৫%
পরবর্তী নিবন্ধশাহসুফি আবদুচ্ছালাম ঈছাপুরীর বার্ষিক ওরশ ২৫ মার্চ