গুমাইবিলে সবুজের সমারোহ

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ৭ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:৫৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডার খ্যাত রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিল এখন সবুজে ছেয়ে গেছে। আমন চাষাবাদের শুরুর দিকে অনাবৃষ্টির কারণে বাড়তি খরচে আবাদ করতে হয়েছে, পরে ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ভেসে যায় সেই চাষাবাদ। এরপর নতুন উদ্যোমে লাগানো রোপা আমনে এখন সবুজে ছেয়ে গেছে গুমাইবিল। শংকা কাটিয়ে এই বিলের ১৫ হাজার কৃষক ধানের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার চন্দ্রঘোনাকদমতলী, মরিয়মনগর, হোসনাবাদ, স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রয়েছে দেশের অন্যতম বৃহত্তর গুমাইবিল। বিলের বিস্তীর্ণ কৃষি মাঠ এখন সবুজ প্রান্তর। যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজের সমারোহ। যেনো সবুজ গালিচা বিছিয়ে দেয়া হয়েছে মাঠজুড়ে। অথচ মাস দেড়েক আগেও এই কৃষি মাঠঘিরে শঙ্কা ছিলো, কৃষকদের মাঝে ছিলো কষ্টের আবাদ নষ্টের হাহাকার। তবে বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে শতভাগ আমন আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। গুমাই বিলের কৃষক মো. রেজাউল করিম বলেন, এবার আমি ৮ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করেছি। তারমধ্যে চার হেক্টর জমি পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ঋণ নিয়ে আবারও চারা লাগিয়েছি। কৃষি অফিসার আমাদের কাছ থেকে আইডি কার্ড আর ছবি নিয়েছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা পাইনি।

মো. আক্কাস আলী নামে অন্য একজন কৃষক বলেন, প্রথমদিকে বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে আবাদ করতে হয়েছে। আবার বৃষ্টি শুরু হলে অতিরিক্ত শ্রমিক লাগিয়ে কাজ করিয়েছি। এরপর টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ভেসে যায় আমাদের স্বপ্ন। বন্যার পানি নামার পর আবারও চাষাবাদ করেছি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে রাঙ্গুনিয়ার ১৫ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। এরমধ্যে গুমাইবিলের ৩৫০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তায় তাদের আইডি কার্ড ও ছবি সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতন মহলে পাঠানো হলেও এখনো কোনো সাহায্য আসেনি। এছাড়া গুমাইবিলসহ উপজেলার বিভিন্ন কৃষি মাঠের পোকা দমনে আলোক ফাঁদসহ নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

এই ব্যাপারে গুমাইবিলে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার জানান, বন্যার পানিতে গুমাইবিল প্লাবিত হলেও ব্রিধান৫১ ও ৫২ জাতের আবাদ ক্ষতি হয়নি। এই চাষাবাদ ইতোমধ্যেই বেশ পরিপুষ্ট হয়েছে। অন্যদিকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর লাগানো রোপা আমনও এখন পরিপুষ্ট। আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ ফলন আসবে এবং নভেম্বরের দিকে কাটার উপযুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় জামায়াতের আমিরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
পরবর্তী নিবন্ধপ্রস্তুত থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন আজ