গুডস হিলে ‘রাজাকার হিল’ সাইনবোর্ড

হুম্মামকে চট্টগ্রামে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৩০ অক্টোবর, ২০২২ at ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বাড়ি গুডস হিল ঘেরাও কর্মসূচি থেকে বাড়ির মূল ফটকের ডান পাশের দেয়ালে ‘রাজাকারের বাড়ি’ লিখে দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা। বাড়ির সামনে ‘রাজাকার হিল’ লিখে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন তারা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তিকামী নিরস্ত্র বাঙালিদের ধরে নিয়ে হত্যা-নির্যাতনের জন্য গড়ে তোলা সেই ‘টর্চার ক্যাম্প’ গুডস হিলকে বাজেয়াপ্ত করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর করারও দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল শনিবার গুডস হিল ঘেরাও কর্মসূচি থেকে বাড়ির গেটে প্রতীকী তালা লাগিয়ে দেন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা।

সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, গুডস হিলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর নির্যাতন চালানো হতো। এটি মূলত নির্যাতনকেন্দ্র ছিল। তাই বাড়িটিকে জাদুঘরে রূপান্তর করতে হবে। বাড়ির ফটকে প্রতীকী তালা ঝুলিয়ে দেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের নেতাকর্মীরা।

গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী তার বাবাকে ‘শহীদ’ উল্লেখ করে বক্তব্য দিয়েছিলেন। এর প্রতিবাদে ২২ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড ঘোষণা দেয়, হুম্মাম কাদের চৌধুরী নিজের বক্তব্যের জন্য সাত দিনের মধ্যে ক্ষমা না চাইলে ২৯ অক্টোবর গুডস হিল ঘেরাও করা হবে।

গতকাল সকালে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সংগঠনটি গুডস হিলের সামনের সড়কে ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করে। কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা একাত্মতা প্রকাশ করেন। সমাবেশ শুরুর আগেই বাসার গেটে ‘রাজাকার হিল’ লেখা সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়। আশেপাশে দেয়ালে রাজাকার বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান লেখা হয়।

হুম্মামকে চট্টগ্রামে অবাঞ্ছিত ঘোষণা : সমাবেশ থেকে চট্টগ্রামে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সরোয়ার আলম মনি পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ হুম্মাম কাদের চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদে তাকে চট্টগ্রামে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সন্তানদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানান বক্তারা।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের বাংলাদেশের রাজনীতি ও নির্বাচন অযোগ্য ঘোষণা, তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের অনূকূলে নেওয়া, প্রতি উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা প্রস্তুত করে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা, নিরস্ত্র বাঙালি ও মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতনের জন্য ১৯৭১ সালে গড়ে তোলা টর্চার সেলগুলোকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা ও হুম্মাম কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহের মামলা করা। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি মানা না হলে পরে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণাও করা হয় সমাবেশ থেকে।

ঘেরাও কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর বিকালে এই সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় দেখা যায়, গুডস হিলের দেয়ালের ‘রাজাকারের বাড়ি’ লেখাটি কালো রং দিয়ে মুছে দেয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশহীদ মিনারে জুতা খুলে উঠতে বলায় চবি শিক্ষার্থীকে মারধর
পরবর্তী নিবন্ধবিদিশাকে রওশন এরশাদ ও জাতীয় পার্টির নাম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা