বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, তার ছেলে রাউজান উপজেলা বিএনপির প্রাথমিক সদস্য শামীর কাদের চৌধুরীসহ চারজনকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া বাকি দুইজন হচ্ছেন– রাউজান উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ আহমেদ মেম্বার ও নুরুল হুদা চেয়ারম্যান। তারা দুইজনই গিয়াস কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। গত মঙ্গলবার রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত পৃথক নোটিশে তাদের বিরুদ্ধে ‘ধনী দেশি ও প্রবাসীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়’সহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না– তার যথাযথ কারণ দেখিয়ে তিনদিনের মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
গিয়াস কাদেরের বিরুদ্ধে ৫ অভিযোগ : গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দেয়া নোটিশে পাঁচটি অভিযোগ তুলে ধরে বলা হয়, ‘আবেদনের প্রেক্ষিতে দল কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগগুলো উল্লেখ করা হয়’। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে– এলাকায় দলমত নির্বিশেষে ধনী ব্যবসায়ীর তালিকা করে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায়। ওমান বসবাসরত সিআইপি ব্যবসায়ী ইয়াসিনের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা চাঁদা দাবি, চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ইয়াসিনের রাউজানের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া। সিআইপি ব্যবসায়ী মো. ফোরকানের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে না পেয়ে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ফোরকানকে নির্মম শারীরিক নির্যাতন। বিদেশে অবস্থানরত রাউজানের ব্যবসায়ীদের ওপর ঢালাও চাঁদাবাজির মাধ্যমে এলাকাকে আতঙ্কের জনপদে পরিণত করা।
নোটিশে বলা হয়, স্বঘোষিত কমিটি ঘোষণা করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বের প্রতি চরম অনাস্থা ও ধৃষ্টতা দেখিয়ে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করে ‘রাউজান কমিটি গঠন করতে কারোর প্রয়োজন নেই, আমার এলাকা আমি করবো’ বলেছেন গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী।
নোটিশে আরো বলা হয়, দীর্ঘ ৬ বছর বিদেশে থেকে নতুন সরকারের শুরুতে দেশে এসে দেশ–বিদেশের সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে রাউজানে অস্থিরতা ও মারাত্মক আতঙ্ক তৈরি করেছেন। যা রাঙ্গুনিয়া সীতাকুণ্ডসহ উত্তরের অন্যান্য নির্বাচনী এলাকায় বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
বাকি তিন জনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ : শামীর কাদের চৌধুরী, ফিরোজ আহমেদ মেম্বার ও নুরুল হুদা চেয়ারম্যানকে দেয়া নোটিশে বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় দুষ্কর্মে সহযোগিতা, দেশি ও প্রবাসী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, চাঁদা না পেয়ে কাউকে কাউকে হুমকি প্রদর্শনসহ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অনৈতিক নানা অভিযোগ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খানের নেতৃত্বে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার লিখিত জবাব দিতে বলা হয়।