গায়কী দিয়ে শ্রোতাদের মন জয় করেছেন বেলী

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২২ মে, ২০২১ at ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের মেয়ে বেলী আফরোজ। নিজের গায়কী দিয়ে ইতোমধ্যেই জয় করে নিয়েছেন দর্শক শ্রোতাদের হৃদয়। তৃতীয় শ্রেণি থেকেই সুর তার কণ্ঠে, তাল তার কানে। ২০১২ সালে সংগীত রিয়েলিটি শো ‘পাওয়ার ভয়েজ’র মাধ্যমে পরিচিত পাওয়া চট্টগ্রামের মেয়েটি পুরোদমে ব্যস্ত গান নিয়ে। প্লে ব্যাক সিঙ্গার হিসেবে ইতোমধ্যেই নিজেকে তুলে ধরেছেন সঙ্গীত বোদ্ধাদের কাছে এবং অবশ্যই ভক্তদের কাছেও। সিনেমার গানে প্লে ব্যাক করছেন, এর মধ্যে সেই সংখ্যা ছাড়িয়েছে সত্তরের বেশি। ঈদে মুক্তি পেয়েছে তার নতুন গান, ‘রাতের শহর একদমই ফাঁকা’।
ফাঁকা শহর কি ভালো লাগে? বেলীর উত্তর না। তার পছন্দ মানুষ। সেই মানুষই এখন ঘরবন্দী ভয়াল করোনার কারণে। তাই বেলীর মন খারাপ। আগের মতো মঞ্চের সেই উদ্দামতা নেই, ভক্ত শ্রোতাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগের চেষ্টাটাই বৃথা। তবে আশাবাদী বেলী জানান, এ বিরুদ্ধ সময় কেটে যাবে, আসবে আলো, জাগবে মানুষ। গানের শুরু তার তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময়। মায়ের আগ্রহে সংগীত চর্চা শুরু চট্টগ্রামের ধ্রুব পরিষদে। এরপর ওস্তাদ মিহির লালার কাছে ক্ল্যাসিক্যাল সংগীত শেখা। বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরোনোর আগেই ভাইয়ার (আলী আকবর সুমন) হাত ধরে ড্রামসে হাতে খড়ি। ব্যাপার অবাক করার মতোই। কিন্তু বেলীর উত্তর, তখন আমি ক্লাস সিক্সের স্টুডেন্ট। ভাইয়া বাজাতেন। আমি ভাবলাম, ছেলেরা যদি পারে, মেয়েরা কেন নয়? ভাইয়ার সঙ্গে বাজাতে বাজাতে একসময় পোক্ত হয়ে যান ড্রামেও। এরপর গঠন করলেন ব্যান্ড দল ব্লু বার্ডস। এবার ঘরের চার দেয়াল ছেড়ে সোজা মঞ্চে। বাজাতেন, ফাঁকে ফাঁকে গাইতেন। বেলীর গায়কী লুফে নিলেন, দর্শক শ্রোতারা। এরপরের গল্প শুধুই জয়ের। বেলীর কাছে পাওয়ার ভয়েজ সংগীত জীবনের ‘টার্নিং পয়েন্ট’। বললেন, নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস ছিল আগে থেকেই, পাওয়ার ভয়েজ সেই ভিত আরও শক্ত করে দিয়েছে। কারণ সব ধরনের গান গাইতে হয়েছে প্রতিযোগিতায়। চূড়ান্ত পর্যায়ে আমি চতুর্থ হই। তবে সেরা দশে থাকাবস্থায় প্রথম সিনেমার গানে প্লে ব্যাক করি সঙ্গীত পরিচালক ইমন সাহা দাদার আগ্রহে। এটি আমার জন্যে তখন বিশাল প্রাপ্তি ছিল। ‘রাঙা মন’ ছবি দিয়ে শুরু করে এখন পর্যন্ত সর্বনাশা ইয়াবা, ভালোবাসা সীমাহীন, প্রেমের হাট, বুলেট, নগর মাস্তান, অন্তর্জ্বালা, কেন এমন হয় সহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছবিতে প্লে ব্যাক করেছেন। বেলীর গাওয়া সুপার হিট গান ‘হায়রে হায়রে’। কবির বকুলের কথায় ২০১৭ সালের দেশীয় সংগীতে বিপুল জনপ্রিয় এই গানটির সংগীত পরিচালনা করেন শওকত আলী ইমন। সংগীত বোদ্ধারা মনে করেন এই গানটির বিশাল সাফল্যের নেপথ্যে ছিল বেলীর সুগায়কী আর মিউজিক ভিডিওতে তার অসামান্য নৃত্য পারঙ্গমতা ভরা পারফরম্যান্স। বেলী বলেন, বাণিজ্যিক ঘরানার পাশাপাশি মৌলিক কিছু কাজ করারও চেষ্টা করছি। বড় ব্যাপার শ্রোতাদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে ভালো, যা আমাকে এগিয়ে দিচ্ছে। পাওয়ার ভয়েজের মহাগুরু প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার একটি কথা বারবার বেলীর কানে বাজে, ‘তুমি ভার্সেটাইল শিল্পী’। ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখতেন রুনা লায়লার মতো লাখো শ্রোতার মন কাড়বেন। সেই স্বপ্ন পূরণ করে চলেছেন বেলী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজীবন্ত মৌমাছি গায়ে জোলির ফটোশুট
পরবর্তী নিবন্ধবিদায়ের দ্বারপ্রান্তে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার