গানের ভুবন

সত্যব্রত বড়ুয়া | সোমবার , ৭ অক্টোবর, ২০২৪ at ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ

একবার খবরের কাগজে দেখেছিলাম যে একজন বিজ্ঞানী গবেষণা করে দেখেছেন গাছ গান শুনতে ভালোবাসে, তবে উচ্চ কন্ঠের গান সহ্য করতে পারে না, এতে তার ফলন কমে যায়। বলা যেতে পারে গাছ কোমল সুরের গান পছন্দ করে। মানে রবীন্দ্র সংগীত হলো উপযুক্ত। আমার মনে হয় উচ্চাঙ্গ সংগীত, ব্যান্ড সংগীত, কীর্তন এ ধরনের গান গাছকে না শোনানই ভালো। আগে কলের গানের ‘সাউন্ড বক্সে’ দেখতাম একটা কুকুরের ছবি। কুকুর নিশ্চয়ই গান শুনতে ভালোবাসে বলে এ ধরনের ছবি দেওয়া হতো। আমার ধারণাটা সঠিক কিনা এ জন্য একদিন আমি উচ্চ কন্ঠে গান গেয়ে উঠলাম। দেখলাম পাড়ার কুকুরগুলো আমার গান শুনে এক যোগে ঘেউ ঘেউ করে উঠলো। আমি ভয় পেয়ে গান গাওয়া থামিয়ে দিলাম। আমরা প্রায় সময়ই মহিলা সংগীত শিল্পীদের কোকিল কন্ঠী বলে আখ্যায়িত করি, কিন্তু কোকিল পাখি কী জানে সে গান গায়? আমরা কোনো কোনো সময় কুকুরকে কান্নার সুরে ডাকতে দেখি। আসলে কুকুর তার প্রেমিকাকে না পেয়ে বিরহের গান গায়। আগে অনেক অন্ধ ভিখারীকে রাস্তায় গান গেয়ে ভিক্ষা করতে দেখতাম। সে মন প্রাণ ঢেলে গান গাইতো। আমরা মুগ্ধ হয়ে সে গান শুনেছি। এখন মাঝে মাঝে অন্ধ ভিখারীকে গান গাইতে দেখি। এ গান শুনে মুগ্ধ হই না। কারণ এরা ভেজাল অন্ধ। রাস্তায় যখন হাঁটি তখন বিচিত্র সব আওয়াজ শুনি। মনে হয় আমরা সবাই কোরাস গান গাইছি। ছেলেবেলায় পড়া ‘পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল’ কবিতাটি এখন ঘুরিয়ে বলতে ইচ্ছে করে, ‘গাড়ি সব করে রব রাতি পোহাইল’। রবও তো আসলে এক ধরনের আধুনিক গান। সেকালের রাজা বাদশাহ্‌দের খুশি করবার জন্য তোষামোদকারীরা তাদের গুণগান করতো। এখন রাজা বাদশাহ্‌ না থাকলেও হারিয়ে যায়নি। রয়েছে অন্য চেহারায়। এ কালের তোষামদকারীরা তাদের গুণগান করে। পায় পুরস্কারও। আমরা সবই এখন গানের ভুবনে বসবাস করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাশেদ রউফ-এর অন্ত্যমিল
পরবর্তী নিবন্ধজেনেসিস