গানেই শত বছর বাঁচতে চান সাব্বির

আরটিভির মিউজিক অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তি

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৫ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:২৩ পূর্বাহ্ণ

সঙ্গীত তার রক্তে মিশে আছে। বেড়ে উঠেছেন সুর, তাল, লয় আর ছন্দের মিশেলে। পরিবার থেকে কঠোর নির্দেশনা ছিল পড়াশোনা আর সঙ্গীত দুটোই যেন সমানতালে চলে। বলছিলাম সদ্য আরটিভির মিউজিক অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত চট্টগ্রামের সন্তান সাব্বির জামানের কথা। এখন তিনি চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে দেশের একজন তারকা শিল্পী। গান তার কাছে সাধনার ধন। সাব্বিরের কথা, আমি এমন কিছু গান করে যেতে চাই, যে গানগুলো একশ বছর পরও মানুষ মনে রাখবে। আমার গান গেয়ে অন্য কোনো প্রতিযোগী শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ছিনিয়ে নেবে।
সাব্বিরের পরিবার চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক পরিবার। নানা গোলাম মর্তুজার হাত ধরেই তার গানের শুরু। উনি বেতার টেলিভিশনে মাইজভান্ডারি গানের শিল্পী ছিলেন। পাশাপাশি সঙ্গীত পরিচালনার কাজও করতেন। মা পান্না জামান ছিলেন রেডিও টেলিভিশনে ফোক সঙ্গীতে বিশেষ গ্রেডের শিল্পী। নানার সাংস্কৃতিক সংগঠন ছিল শিশির সংঘ। ছোট থেকে এই পরিবেশেই বড় হওয়া। গান শিখতে তাই বেগ পেতে হয়নি। তিনি বলেন, প্রথমে নানা, মামা, মায়ের কাছে শেখা। ছোটবেলায় নতুন কুঁড়িতে গোল্ড মেডেল পেলাম। কলেজে পড়ার সময় ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতে তালিম নিই সুরবন্ধু অশোক স্যার, নজরুল সঙ্গীতে এমদাদ সেলিম স্যারের কাছে। তারপর বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শুরু। ক্লোজআপ ওয়ানের পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
সঙ্গীতের জন্য বেস্ট সিঙ্গার, ২০২০ অ্যাওয়ার্ড তার দ্বিতীয় সম্মাননা। প্রথমটা ছিল আরটিভি স্টার অ্যাওয়ার্ড, ২০১৭ সালে যেটি তার হাতে উঠেছিল। পপুলার চয়েজ বেস্ট সিঙ্গার ক্যাটাগরিতে তিনি পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তি সবসময় আনন্দের, আবার ভয়ও আছে। দর্শক শ্রোতাদের প্রত্যাশা পূরণের দায়বদ্ধতা বাড়িয়ে দেয়।
গান করার পাশাপাশি সুর সঙ্গীতের কাজটাও চালিয়ে যাচ্ছেন সাব্বির। সাব্বির জানান, সম্প্রতি ক্লোজআপ তারকা রাশেদের জন্য কাজ করেছেন। নিজের জন্য তৈরি করেছেন দুটি গান। যেগুলো আরও আগেই মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। করোনার কারণে থমকে ছিল কাজগুলো। এখন মিউজিক ভিডিওর কাজ চলছে। এখন অডিওর তো কোনো প্ল্যাটফরম নেই। মিউজিক ভিডিওর জন্য তাই আটকে থাকতে হয়।
ইতোমধ্যে সাব্বিরের বেশ কয়েকটি গান সমাদৃত হয়েছে স্রোতাদের কাছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘ও বন্ধু রে’, ‘লেনাদেনা’, ‘ঢোলে ঢোলে’। এ গানগুলো স্টেজে কিংবা টেলিভিশনে গেলে গাইতেই হয়। সম্প্রতি ফোক গান ‘মধুর করে ডাকো’ শ্রোতারা বেশ পছন্দ করেছেন। চলচ্চিত্রে কাজ করছেন, তবে কম। এ পর্যন্ত সাত-আটটা চলচ্চিত্রে কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়েছে। সঙ্গীত পরিচালনার কাজও করেছেন।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান প্রসঙ্গে সাব্বির বলেন, চট্টগ্রামের গান এমনিতেই সমৃদ্ধ। আমি বা আমরা গেয়ে তাকে সমৃদ্ধ করতে হবে না। চট্টগ্রামের গান পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যে যিনি করেছেন তিনিই স্টার হয়েছেন। আমি চট্টগ্রামের ভাষায় মৌলিক গান করার পক্ষপাতী। যেমন সম্প্রতি ‘বন্ধু প্রেমের বাণ মারি’ গান করেছি চট্টগ্রামের ভাষায়। এখনকার নতুন শ্রোতা যারা তারা চট্টগ্রামের গানের দিকে ঝুঁকবেন।
তিনি মনে করেন, বাণী ও সুর গানের প্রাণ। তারপর গায়কী। তিনি বলেন, আমি এমন কিছু গান রেখে যেতে চাই, হিট হোক বা ফ্লপ হোক, এটা উপরওয়ালার ব্যাপার। কিন্তু গানগুলো যেন বেঁচে থাকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপরীমনির বিরুদ্ধে মাদকের মামলায় অভিযোগপত্র
পরবর্তী নিবন্ধশিক্ষা নীতি ও শিক্ষা কার্যক্রম পরিবর্তনের আহ্বান