বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গত এক সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিক বিক্ষোভ করে আসছেন গাজীপুরের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা। এর মধ্যেই ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকা নির্ধারণের ‘গুজব’ ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি গড়ায় সহিংসতায়। গতকালও গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন শ্রমিকরা। গতকাল অবরোধের কারণে ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কালিয়াকৈরের মৌচাক বাজার এলাকায় একটি পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায় শ্রমিকরা। সফিপুর এলাকায় আরেকটি পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। সোমবার গাজীপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধলে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। বিক্ষোভ চলাকালে গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় আগুন দেওয়া হয়; সেখানে প্রাণ যায় আরেকজনের। খবর বিডিনিউজের।
সহিংসতা হলে কারখানা বন্ধ করার হুমকি বিজিএমইএর : পোশাক খাতের ন্যূনতম মজুরি নিয়ে চলমান শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে কোথাও সহিংসতার আশঙ্কা দেখা দিলে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। গতকাল মঙ্গলবার উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা বলেন। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, সরকার গঠিত ন্যূনতম মজুরি বোর্ড মজুরি ঠিক করার জন্য কাজ করছে। নভেম্বরের মধ্যে নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করা হবে। আমরা পোশাক শিল্পের সব উদ্যোক্তা সেটা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করব। আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, যখন ন্যূনতম মজুরি নিয়ে কাজ চলছে তখন কিছু কিছু স্থানে শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। অথচ মজুরি ঘোষণার আগে কোনো আন্দোলন করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পোশাক কারখানায় ভাঙচুর ও সহিংসতা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই পরিপ্রেক্ষিতে বলতে চাই, দেশ ও শিল্পের স্বার্থে, শ্রমিকদের কর্মসংস্থান সুরক্ষিত রাখতে যদি কোনো কারখানায় শ্রমিকরা কাজ না করে কারখানা থেকে বের হয়ে আসে বা বাইরে থেকে ভাঙচুর চালায়, তবে মালিকরা ১৩ এর ১ ধারায় কারখানা বন্ধ রাখতে পারবে।
সংঘাত সহিংসতা নিয়ে শ্রমিকদের সতর্ক করে বিজিএমএই সভাপতি বলেন, আমরা কারখানা চালু রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তারপরও যদি কোনো শ্রমিক ভাঙচুর করে বা বাইরের শক্তিকে নিয়ে আসে, তখন সেই কারখানা ১৩ এর ১ ধারা অনুযায়ী বন্ধ করে দেওয়া হবে। মালিকদের সেই অধিকার আছে যে তারা তাৎক্ষণিকভাবে কারখানা বন্ধ করে দেবে।