গাজা পরিস্থিতি ভয়াবহ : জাতিসংঘ

৬ দিনে ৬ হাজার বোমাবর্ষণ, একদিনেই নিহত ১৫০ নেই বিদ্যুৎ, ফুরিয়ে আসছে খাবার ও পানি জিম্মি মুক্তি ছাড়া অবরোধের অবসান হবে না : ইসরায়েল

| শুক্রবার , ১৩ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ

ইসরায়েলের অবরোধে খাবার, পানি ফুরিয়ে আসতে থাকায় গাজায় ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। গাজা এখন সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ। টানা ছয়দিনের বিমান হামলায় সেখানকার মানবিক পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর দিকে মোড় নিচ্ছে। গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানকার অধিবাসীরা এখন জেনারেটরের ওপর নির্ভর করছে।

আলজাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের অবিরাম গোলা বর্ষণে কেবল বৃহস্পতিবার একদিনেই ১৫০ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। তারা গত ছয়দিনে ছয় হাজার বোমা বর্ষণ করেছে। প্রাণহানি বেশিরভাগই বেসামরিক লোকজনের। এর মধ্যে বাদ পড়ছে না দুই বছরের শিশুও। ইসরায়েল বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলটিতে একের পর এক ধ্বংসাত্মক হামলা চালিয়েই যাচ্ছে। এতে গাজা শহরের অনেকগুলো এলাকা পুরোপুরি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কতজনের মরদেহ চাপা পড়ে আছে তা অজানাই থেকে যাচ্ছে। আল জাজিরা জানিয়েছে, এর মধ্যে ইসরায়েল যেকোনো সময় স্থল হামলা শুরু করবে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের মুখোমুখি সংঘর্ষে হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে বলে আশঙ্কা বিরাজ করছে।

দুই দিকে ইসরায়েল, একদিকে মিশর ও অন্যদিকে ভূমধ্যসাগরের মাঝে মাত্র ৪০ কিলোমিটার লম্বা ভূখণ্ডটিতে নিরাপদ স্থান ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে আসায় গাজার অপরাপর বাসিন্দারাও অত্যন্ত অসহায় অবস্থার মধ্যে অনিশ্চিত পরিস্থিতির মোকাবেলা করছেন।

এদিকে রাত নেমে আসার পর গাজা শহরের অধিকাংশ এলাকায় ও ভূখণ্ডটির অন্যত্র ঘন অন্ধকারে ডুবে যান ফিলিস্তিনিরা। গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফায় মাত্র তিনদিন চলার মতো জ্বালানি আছে বলে জানিয়েছেন ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস এর গাজাভিত্তিক কর্মকর্তা ম্যাথিয়াস কানস। গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, গাজায় তাদের পরিচালনাধীন দুটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম, অ্যান্টিবায়োটিক, জ্বালানি ও সরবরাহ ফুরিয়ে যাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আল শিফা হাসপাতাল আহতদের দিয়ে ভরে গেছে, এতে অঙিজেনসহ চিকিৎসা সরবরাহ দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। বাসিন্দারা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ করতে ছুটতে থাকায় দোকানগুলো থেকে টিনজাত খাবার দ্রুত অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। ভূখণ্ডটির একমাত্র কসাইখানাও বন্ধ রয়েছে। সীমান্ত বরাবর উৎপাদিত সবজির সরবরাহ অপ্রতুল হয়ে উঠেছে।

ইসরায়েল বলেছে, হামাস জিম্মি করা ইসরায়েলিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত গাজায় জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও পানি দেওয়া হবে না। গত শনিবার হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে অন্তত দেড়শ জনকে ধরে নিয়ে জিম্মি করেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসকে নির্মূলের হুমকি দিয়ে বলেছেন, হামাস আইএস এর মতো। আমরা হামাসকে ধ্বংস করব। যেমন করে বিশ্ব আইএসকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

বিবিসি জানায়, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) চিফ অব স্টাফ এই প্রথম হামাসের হামলা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে, গত ৭ অক্টোবরের হামলা ঠেকাতে নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅভিযানের খবরে চেম্বার ছেড়ে পালাচ্ছিলেন ‘এমবিবিএস ডাক্তার’!
পরবর্তী নিবন্ধপিস্তল ঠেকিয়ে যুবকের আত্মহত্যার হুমকি, পুলিশের হাতে ধরা