গাজা নিয়ে আরব পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত সমর্থন ইউরোপীয় নেতাদের

| সোমবার , ১০ মার্চ, ২০২৫ at ১১:১০ পূর্বাহ্ণ

ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে না সরিয়েই ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ব্যয়ে ভূখণ্ডটি পুনর্গঠনের যে পরিকল্পনা আরব দেশগুলো করেছে তাতে সমর্থন জানিয়েছে ইউরোপের চার প্রভাবশালী দেশ। খবর বিডিনিউজের।

মিশর প্রস্তাবিত পরিকল্পনা আরব নেতাদের সমর্থন কুড়ালেও ইসরায়েল ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। মাসখানেক আগে ট্রাম্প গাজা নিয়ে তার নিজের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে শহরটিকে মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরায় পরিণত করতে। অন্যদিকে মিশরের প্রস্তাবে ৫ বছরের মধ্যে গাজা পুনর্গঠনের কাজ শেষ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে, যাকে বাস্তবসম্মত অ্যাখ্যা দিয়ে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা শনিবার পরিকল্পনাটিকে স্বাগত জানান বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এক বিবৃতিতে চার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিশরের প্রস্তাবে গাজার জনগণের বিপর্যস্ত জীবনমানের দ্রুত ও টেকসই উন্নতির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আরব নেতাদের সমর্থিত পরিকল্পনায় সাময়িক সময়ের জন্য গাজা পরিচালনার ভার স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞ ও ভূখণ্ডটিতে মোতায়েন আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষীদের একটি কমিটির হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই কমিটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) তত্ত্বাবধানে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম দেখভাল করবে এবং সাময়িকভাবে গাজার দৈনন্দিন বিষয়াদির ব্যবস্থাপনায় থাকবে। এমন এক সময়ে মিশরের এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে যখন গাজার নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তি যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে বলে উদ্বেগ রয়েছে। এই চুক্তির প্রথম ধাপ গত ১ মার্চ শেষ হয়েছে। ইসরায়েল এখন চাইছে প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়াতে, যেখানে আরও জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের কারাগার থেকে ছাড়া হবে। এ লক্ষ্যে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে গাজায় ত্রাণ ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছে তারা। তবে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস চাইছে, চুক্তির সময়ের সমঝোতা অনুযায়ী প্রথম ধাপের পর দ্বিতীয় ধাপ শুরু করতে। এই পর্বে গাজা থেকে সব ইসরায়েলি সেনা সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে কথা বলতে সোমবার কাতারে একটি মধ্যস্থতাকারী দল পাঠাচ্ছে। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ কখন থেকে শুরু হতে পারে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। তবে হামাসের মুখপাত্র আবদেল লতিফ আলকানুয়া চলতি সপ্তাহের বৈঠকে ইতিবাচক কিছু মিলতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে মিশরের বানানো, আরবসমর্থিত পরিকল্পনাটি করা হয়েছে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটি নিয়ে ট্রাম্পের অদ্ভূত এক প্রস্তাবের পর। তার প্রস্তাবে ছিল, যুক্তরাষ্ট্র গাজার দখল নিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যপ্রাচ্যের অন্যত্র সরিয়ে নেবে এবং সমুদ্রলাগোয়া ভূখণ্ডটির এমন চোখধাঁধানো উন্নয়ন করবে যে সেটি দ্রুতই মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরায় পরিণত হবে। সব ফিলিস্তিনি সংগঠন ও আরব নেতারা তার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযুক্তরাষ্ট্র থেকে পাঠানো ১১২ ভিনদেশিকে আপাতত রাখছে পানামা
পরবর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়িতে ৮ পর্যটককে অপহরণের ঘটনায় নারীসহ গ্রেফতার ৪