অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রায় দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েলি গণহত্যায় নিহতের সংখ্যা ৬৫ হাজার ছাড়িয়েছে। গতকাল গাজার স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৬২ জন এবং আহত ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এদিকে গাজায় মঙ্গলবার থেকে হামলার তীব্রতা আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোর থেকে গতকাল পর্যন্ত গাজাজুড়ে অন্তত ১০৬ জন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে বিমান এবং গোলাগুলির শব্দে বার বার কেঁপে উঠেছে গাজা শহর। বাসিন্দারা ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন। কোনও রকমে শেষ সম্বলটুকু বুকে আঁকড়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টায় হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে গাজায়। মায়সার আল আদওয়ান নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘সারা রাত ঘুমাইনি। ভয়, ভয়, সবাই ভয়ে পালাচ্ছেন। আমাদের মাথার উপর বিস্ফোরণ হচ্ছে।’ শুধু একা মায়সার নয়, গাজার সব বাসিন্দার অভিজ্ঞতা একই।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, হামলার মুখে পালাতে থাকা লোকজনকে বহনকারী একটি গাড়িও ইসরায়েলের বোমায় আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে। শহরের অন্তত ১৭টি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়েছে। বোমা বর্ষণের পাশাপাশি সেনারা উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব অংশেও বিস্ফোরক–ভর্তি রোবট ব্যবহার করে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।
ধ্বংসস্তূপে পরিণত শহর থেকে যখন কালো ধোঁয়া উঠছে, যখন আসবাবপত্রবোঝাই ভ্যান আর গাধার গাড়ি, আর হাতে শেষ সম্বল নিয়ে হেঁটে চলা মানুষদের ভিড় উপকূলীয় আল–রশিদ সড়ক ধরে দক্ষিণমুখী, তখন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ তার এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছেন ‘গাজা জ্বলছে!’ এদিকে গাজায় চলমান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েল রাষ্ট্র ও চরম ডানপন্থি ইসরায়েলি মন্ত্রীদের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তাব করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউয়ের পররাষ্ট্র নীতিমালা বিষয়ক প্রধান কায়া কালাস এ প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, আমি খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের লক্ষ্য ইসরায়েলকে শাস্তি দেওয়া নয়। আমাদের লক্ষ্য গাজায় মানবিক পরিস্থিতির উন্নতি। এই যুদ্ধ শেষ হতেই হবে, এত কষ্টের শেষ হতেই হবে, সব বন্দিকে মুক্ত করা হোক।












