গাজার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটির অন্তত তিনটি হাসপাতাল বা হাসপাতালের কাছে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় আহত ও ঘরবাড়ি হারা বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার মানুষে হাসপাতালগুলো ভর্তি হয়ে আছে, গতকাল শুক্রবারে সেখানে হামলা চালিয়ে দেশটি ফের ফিলিস্তিনি জনপদটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে বিপদগ্রস্ত করেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কিদরা আল জাজিরা টেলিভিশনকে বলেছেন, গত কয়েক ঘণ্টায় ইসরায়েলি দখলদাররা বেশ কয়েকটি হাসপাতালে একযোগে হামলা চালিয়েছে। খবর বিডি/বাংলানিউজের।
ইসরায়েল গাজা সিটির বৃহত্তম হাসপাতাল আল শিফার প্রাঙ্গণে হামলা চালিয়েছে আর তাতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে কিদরা জানিয়েছেন, কিন্তু কতোজন হতাহত হয়েছে বিস্তারিত জানাননি। ইসরায়েল বলছে, আল শিফার নিচে ভূগর্ভে কমান্ড সেন্টার ও টানেল লুকিয়ে রেখেছে হামাস। কিন্তু ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিদরার বিবৃতির বিষয়ে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি, রয়টার্সও স্বতন্ত্রভাবে তার অভিযোগ যাচাই করে দেখতে পারেনি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটির ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে ১৮টি এবং অন্য ৪০টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র বোমা হামলার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অথবা জ্বালানির অভাবে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। শুক্রবার ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম আল শিফা হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে বলেছে, সেটি হাসপাতালটির পার্কিং লটে ইসরায়েলের হামলার পরবর্তী চিত্র। পার্কিং লটটিতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিয়েছিল আর সাংবাদিকরা তাদের পর্যবেক্ষণ করছিল বলে জানিয়েছে তারা।
গাজায় দিনে চার ঘণ্টা যুদ্ধে ‘বিরতি’: এদিকে লোকজন যাতে সরে যেতে পারে, সেজন্য গাজার উত্তরাঞ্চলে প্রতিদিন চার ঘণ্টা যুদ্ধে বিরতি দিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজ এ ঘোষণা দিয়েছে। খবর আল জাজিরা। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি জানান, বৃহস্পতিবার প্রথম মানবিক বিরতির এ ঘোষণা হচ্ছে। ইসরায়েল চার ঘণ্টা বিরতির অন্তত তিন ঘণ্টা আগে জানাবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিরবি বলেন, ইসরায়েলিরা আমাদের বলেছে, বিরতির সময়ে এ অঞ্চলে কোনো সামরিক অভিযান চালানো হবে না। এই প্রক্রিয়া আজ থেকেই শুরু হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া লোকেদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনার সময় ইসরায়েলকে তিন দিনের বেশি বিরতি দেওয়ার জন্য বলেছিলেন। তবে তিনি সাধারণ যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা অস্বীকার করেন। কিরবি স্পষ্ট করেন যে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতি হবে না। তিনি বলেন, এটি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীকে ৭ অক্টোবর তারা যা করেছে তাতে বৈধতা দিতে সাহায্য করবে। আমরা এ সময়ে এর পক্ষে দাঁড়াতে যাচ্ছি না। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিচার্ড হেক্ট বলেন, কোনো যুদ্ধবিরতি নয়। আমি আবারো বলছি, যুদ্ধবিরতি নয়। আমরা যা করছি, সেটি হলো চার ঘণ্টার বিরতি, এসব কৌশলগত, মানবিক সাহায্যের জন্য স্থানীয় বিরতি।