ফিলিস্তিনের উত্তর গাজার জাবালিয়ায় জাতিসংঘের পরিচালিত ‘আল–ফাখুরা’ নামে একটি স্কুলে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছে। গতকাল শনিবার ভোরে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ পরিচালিত ওই স্কুলটিতে ইসরায়েলী বাহিনীর অবিরাম হামলা থেকে বাঁচতে শত শত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। খবর বাংলানিউজের।
এদিকে বিডিনিউজ জানায়, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে আবাসিক এলাকায় গতকাল তিনটি ভবনে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ইসরায়েলি বাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলে অভিযান শুরু করার কথা জানিয়েছে। যে কারণে দক্ষিণ গাজা থেকে বেসামরিকদের তারা সরে যেতে বলেছে। ইসরায়েলের ওই সতর্কবার্তার পর গতকালের এ হামলা হয়। যার ফলে ইসরায়েলের হামলার ভয়ে প্রাণ বাঁচাতে যে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি গাজা সিটিসহ গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণে পালিয়ে গিয়েছিল তাদের এখন আবার উত্তরে ফিরে আসতে হবে। দক্ষিণের সর্ববৃহৎ শহর খান ইউনিস, যেখানে উত্তর থেকে পালিয়ে আসা সবচেয়ে বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল তাদেরসহ শহরটির চার লাখের বেশি বাসিন্দাকেও এখন বাড়িঘর ছাড়তে হচ্ছে। শহরটিতে চরম মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সহযোগী মার্ক রেজেভ বলেন, আমরা লোকজনকে সরে যেতে বলেছি। আমি জানি অনেকের জন্য বিষয়টি খুবই কঠিন, কিন্তু আমরা চাই না বেসামরিক লোকজন হামাসের সঙ্গে আমাদের লড়াইয়ের মধ্যে পড়ুক। গাজার সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করার প্রতিজ্ঞা করে গাজায় এক মাসের বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় প্রাণহানির সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। যাদের মধ্যে ৫ হাজারের বেশি শিশু। তারা আরো জানায়, গতকাল শনিবার রাতে খান ইউনিসের একটি ব্যস্ত আবাসিক এলাকায় দুইটি বহুতল ভবনে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ২৬ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৩ জন আহত হয়েছেন। দেইর আল–বালাহ শহরেও গতকাল একটি বাড়িতে বোমা হামলায় আরো ছয় জন নিহত হন।
আল–শিফা হাসপাতাল : ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল–শিফার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) সব রোগী মারা গেছে। গত শুক্রবার হাসপাতালটির প্রধান জানান, এরআগে, আল–শিফার আইসিইউতে থাকা ৬৩ রোগীর ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এবার মাত্র দুদিনের মাথায় বাকি সব রোগী মারা গেলেন।
জানা যায়, হাসপাতালের ভেতরে সাত হাজার মানুষ আটকা আছেন। চিকিৎসকরা এখনো রোগীদের চিকিৎসা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে চলেছেন। ইসরায়েলি বাহিনী কাউকে ঢুকতে বা বের হতে না দেওয়ায় হাসপাতালটি বড় কারাগার ও গণকবরে পরিণত হয়েছে। আল–শিফা হাসপাতালে হামাস যোদ্ধাদের গোপন সুড়ঙ্গ রয়েছে, এমন দাবি করে হাসপাতালটি ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলের সেনারা। যদিও হামাসের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের এ দাবিকে নাকচ করে দেওয়া হয়।