ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫৩ হাজার ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে হামলায় নিহত বেড়ে ১৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। খবর আল জাজিরার। জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে এক একটি মেডিকেল ক্লিনিকে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়েছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। তারা জানান, আল–তওবা ক্লিনিকের উপরের তলায় হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। খবর বাংলানিউজ/বাসসের।
নাকবা দিবসের ৭৭ বছরপূর্তির দিনে ইসরায়েল এই হামলা চালাল। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার সময় অনেক ফিলিস্তিনি নির্যাতনের শিকার হয়। অনেককে বাস্তুচ্যুত হতে হয়। সেই বিপর্যয়ের স্মরণে নাকবা দিবস পালিত হয়। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় বেড়ে ৫৩ হাজার ১০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন এক লাখ ১৯ হাজার ৯১৯ জন। এদিকে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাদের অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গাজার শেষ হাসপাতালটিও ইসরাইল ধ্বংস করে দিল : এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধাণম ঘেব্রিয়েসুস বলেছেন, ইসরাইলি হামলার পর গাজার ক্যান্সার এবং হৃদরোগের চিকিৎসা প্রদানকারী শেষ হাসপাতালটিও বন্ধ করে দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছে। জেনেভা থেকে এএফপি আজ এই খবর জানায়। জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসুস এক্স–এ এক বার্তায় বলেছেন, মঙ্গলবারের হামলার ফলে খান ইউনিসের ইউরোপীয় হাসপাতাল ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং চিকিৎসা সেবা প্রদানের অনুপযোগী’ হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেছেন, এটি ‘ এখন আর কার্যকরী নয়’, ডব্লিউএইচও’র একটি দল হামলার সময় কাজে নিয়োজিত জরুরি চিকিৎসা কর্মীদের সরিয়ে নিয়েছে। টেড্রোস বলেছেন, ‘মিশনের ঠিক আগে কাছাকাছি একটি হামলা হয়েছিল’, কর্মীদের নাসের মেডিকেল কমপ্লেঙে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান আধাণম বলেছেন, ‘হাসপাতালটি বন্ধের ফলে নিউরোসার্জারি, হৃদরোগের চিকিৎসা এবং ক্যান্সারের চিকিৎসাসহ গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, এসব পরিষেবাগুলোা গাজার অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।’ টেড্রোস বলেছেন, ‘এই বন্ধের ফলে চিকিৎসা স্থানান্তরের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে এই সুবিধার ভূমিকাও শেষ হয়ে যায়, যা চাপে থাকা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরো চাপের মুখে ফেলে দিয়েছে। ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) দাতব্য সংস্থাটিও বন্ধের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরেছে। তারা এঙে বলেছে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে এখন নাসের হাসপাতালই একমাত্র কার্যকরী হাসপাতাল। ‘এটি ছিল গাজার ভেঙে পড়া স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার শেষ অবশিষ্টগুলোর মধ্যে একটি।’ এতে আরো বলা হয়েছে, ‘দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো গাজা ইউরোপীয় হাসপাতালের কয়েক ঘণ্টা আগে একই দিনে নাসেরকেও আঘাত করা হয়েছিল।’ এমএসএফ জানিয়েছে, ‘অঞ্চলটির অবশিষ্ট হাসপাতালগুলো ‘প্রায়শই আংশিকভাবে কার্যকর। এই হাসপাতালটিতে ক্রমাগত রোগীরা উপচে পড়েছে।’ ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের উপত্যকাকে বসবাসের অযোগ্য করে তোলার ‘স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোতে বারবার হামলা এটি আরো উদাহরণ। টেড্রোস জোর দিয়ে বলেছেন, ‘হাসপাতালগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। তিনি ঘোষণা করেছেন, ‘হাসপাতালগুলো কখনই তাদের টার্গেট করা উচিত নয়।