গাজায় ইসরায়েল নতুন করে পূর্ণ শক্তি নিয়ে যুদ্ধ শুরুর পর চলমান হামলায় ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের হিসাব মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৬৫ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যেই মিশর ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ডটিতে যুদ্ধবিরতি ফেরাতে নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন। মিশর প্রস্তাবটি দিয়েছে গত সপ্তাহে ইসরায়েলের হামলার বাড়–বাড়ন্তের মধ্যে। গত ১৯ জানুয়ারিতে গাজায় শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতিতে ২ মাস মোটামুটি শান্ত অবস্থা বিরাজমান ছিল। গত ১৮ মার্চ মঙ্গলবার সেই যুদ্ধবিরতি ভেস্তে দিয়ে পূর্ণদ্যমে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তারপর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত প্রায় ৭০০ ছাড়িয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত ৪০০ জন নারী ও শিশু। ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাস জানিয়েছে, তাদের বেশ কয়েকজন শীর্ষ রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা হামলায় নিহত হয়েছেন।
মিশরের প্রস্তাব কী : মিশরের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হামাস প্রতি সপ্তাহে পাঁচজন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে, আর ইসরায়েল প্রথম সপ্তাহ শেষে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়ন করবে। হামাসের হাতে এখনও ৫৯ জন জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও হামাস এ প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে, তবে ইসরায়েল এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সাড়া দেয়নি। খবর বিডিনিউজের।
এক হামাস কর্মকর্তা রয়টার্সকে মিশরের প্রস্তাবটির বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানাননি। তবে তিনি বলেন, কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে, যাতে ব্যবধান কমে আসে এবং মতৈক্যে পৌঁছার জন্য আলোচনা শুরু করা যায়, যার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ শুরুর পথ প্রশস্ত হয়। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিশরের প্রস্তাবে গাজা থেকে ইসরায়েলের সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহারের একটি সময়সূচি দেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নিশ্চয়তা থাকবে, আর এর বিনিময়ে হামাস বাদবাকী জিম্মিদের মুক্তি দেবে।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের হিসাবমতে, গাজায় ১৮ মাসের যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে।
রাফায় সংকট আরও তীব্র : রাফা নগরীর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী টেল আল–সুলতান এলাকায় প্রবেশ করায় হাজারো মানুষ আটকা পড়েছে। পরিবারগুলো ধ্বংসস্তূপের মধ্যে খাবার, পানি ও ওষুধ ছাড়া দিন কাটাচ্ছে। ফিলিস্তিনি নাগরিক সুরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, ৫০ হাজার বাসিন্দা রাফাতেই আটকা পড়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ওই এলাকায় সন্ত্রাসী অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে অভিযান চালাচ্ছে।