যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস গাজায় একটি স্কুল ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় বেসামরিক নাগরিক নিহতের নিন্দা জানিয়েছেন। শনিবার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় কেন্দ্রে বিমান হামলা হয়। হামলায় ৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে বিবিসি–কে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক। হ্যারিস বলেছেন, আবারও বহু সংখ্যক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। খবর বিডিনিউজের। তিনি জিম্মি চুক্তি এবং যুদ্ধবিরতি করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, আল–তাবাঈন স্কুলটি হামাস ও ইসলামিক জিহাদের সক্রিয় সামরিক স্থাপনা হিসেবে ব্যবহৃত হত। অ্যারিজোনার ফিনিক্সে এক নির্বাচনী প্রচারণা অনুষ্ঠানে কমলা হ্যারিস বলেন, হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর অধিকার ইসরায়েলের আছে, কিন্তু বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এড়ানোও তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
শনিবারের বিমান হামলার সমালোচনা করেছে পশ্চিমা ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো। মিশর বলেছে, হামলা প্রমাণ করে যে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো বা যুদ্ধ শেষ করার কোনও ইচ্ছা ইসরাযেলের নেই। আল–আহলি হাসপাতালের প্রধান ফাদল নাঈম বলেন, হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ৭০ জন নিহতকে শনাক্ত করা হয়েছে। আরও অনেকের দেহাবশেষ এতটাই বিকৃত হয়ে গেছে যে, তাদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা হামাসের কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে হামাস সন্ত্রাসীদের ওপর সুনির্দিষ্টভাবে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ও ইসরায়েলি নিরাপত্তা সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলায় হামাসের অন্তত ১৯ জন ইসলামিক জিহাদ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। আইডিএফ এর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, গোয়েন্দাদের দাবি, হামলার সময় ইসলামিক জিহাদের সেন্ট্রাল ক্যাম্প ব্রিগেডের কমান্ডার আশরাফ জুদা তাবাঈন স্কুলে ছিলেন।
তিনি বলেন, হামলায় কমান্ডার নিহত হয়েছেন কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে, বিবিসি হতাহতের সংখ্যা যাচাই করতে পারেনি। ইসরায়েলের মুখপাত্রের অভিযোগ, হামাস কর্মকর্তারা হতাহতের যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছেন তা ‘আইডিএফ এর কাছে থাকা তথ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলের যুদ্ধে এ হামলাকে ভয়াবহ অপরাধ বলে দাবি করেছে হামাস। তাদের মতে, এই হামলা বিপদ বাড়িয়ে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র শন স্যাভেট বলেছেন, আমরা বারবার বলেছি যে, ইসরায়েলকে অবশ্যই বেসামরিক ক্ষতি কমানোর জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।
গত কয়েক সপ্তাহে গাজায় এ ধরনের বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। জাতিসংঘের মতে, ৬ জুলাই পর্যন্ত গাজার ৫৬৪টি স্কুল ভবনের মধ্যে ৪৭৭টি সরাসরি আঘাত লেগেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আল–তাবাইন স্কুলে এক হাজারেরও বেশি মানুষকে রাখা হয়েছিল। সমপ্রতি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বেইত হানুন শহরের বাসিন্দাদের বাড়ি ছাড়তে বলায় কয়েক ডজন বাস্তুচ্যুত মানুষ সেখানে আশ্রয় নেয়।