গাজামুখী প্রায় সব ফ্লোটিলা জাহাজ আটকে দিয়েছে ইসরায়েল, এগোচ্ছে কেবল একটি

| শুক্রবার , ৩ অক্টোবর, ২০২৫ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

গাজা অভিমুখে ত্রাণ নিয়ে যাত্রা করা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহরের প্রায় ৪০টি নৌকাকে বাধা দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফিলিস্তিনপন্থি এই ফ্লোটিলাকে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে এই ফ্লোটিলার একটি জাহাজ ‘মিকেনো’ ইসরায়েলের বাধা এড়িয়ে গাজার দিকে অগ্রসর হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। জাহাজটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে সেটি গাজা উপকূলের কাছে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের জলসীমায় ছিল। খবর বিডিনিউজের।

২০০৯ সালে ইসরায়েলের গাজার জলসীমায় নৌ অবরোধ আরোপের পর থেকে এই প্রথম এমন কোনো মানবিক ত্রাণ সহায়তা নৌবহর ভূখণ্ডটির ৭০ ন্যটিক্যাল মাইলের কাছাকাছি পৌঁছল। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ফ্লোটিলার শেষ একটি নৌকা দূরে থাকার খবর নিশ্চিত করেছে। তারা বলেছে, নৌকাটি এগিয়ে এলে এবং সেটি গাজার যুদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করতে চাইলে কিংবা অবরোধ ভাঙতে চাইলে তা ঠেকানো হবে।

গাজার দিকে যে সুমুদ ফ্লোটিলা যাত্রা করেছে সেই নৌবহরে আছে ৪০টির বেশি বেসামরিক নৌকা, যাতে প্রায় ৫০০ যাত্রী আছে। এর মধ্যে আছেন ইতালির রাজনীতিবিদরা এবং সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও। বুধবার রাতে নৌবহরের ১৩টি নৌযান সাগরে আটকে দিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। আটক করা হয় বহরে থাকা ৩৭ দেশের দুই শতাধিক অধিকারকর্মীকে। গাজা উপকূল থেকে মোটামুটি ৭৫ মাইল দূরে ইসরায়েলি বাহিনী বুধবার রাতেই প্রায় সব নৌকাকে থামিয়ে দেয়।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রণারয় থেকে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ফ্লোটিলা নৌবহরের সামনের সারির জাহাজ আলমার ডেকএ ইসরায়েলি সেনা পরিবেষ্টিত হয়ে বসে আছেন গ্রেটা থুনবার্গ। সুমুদ ফ্লোটিলার নৌকাগুলো থামিয়ে সেগুলোর আরোহী থুনবার্গসহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তার করে ইসরায়েলের আসদোদ বন্দরে কাস্টডিতে নেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, তারা ফ্লোটিলার সব অধিকারকর্মীকে ফেরত পাঠাবে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানবিক সাহায্য পরিবহনের জন্য সুমুদ ফ্লোটিলার প্রচেষ্টাকে উসকানিমূলক আখ্যা দিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি বাহিনীর বাধার মুখে পড়ার সময় নৌবহরটি গাজার উপকূলরেখার কাছেকাছি থাকায় তারা আশা করেছিল যে, বৃহস্পতিবার সকালে তাদের জাহাজগুলো গাজায় পৌঁছাবে। ইসরায়েল ফ্লোটিলার যে কর্মীদেরকে গ্রেপ্তার করেছে তার মধ্যে আছেন কয়েকজন আইরিশ নাগরিক, যার মধ্যে আছেনসিন ফেইন সিনেটর ক্রিস অ্যান্ড্রুসও। এছাড়াও আঝেন ২ ইতালি এমপি এবং একজন ফরাসি এমপি।

সুমুদ ফ্লোটিলায় ইসরায়েলের বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে গ্রিস, ইতালি, ব্রাসেলস, জার্মানি, তিউনিসিয়া, বুয়েনস আয়ার্স এবং তুরস্কে বিক্ষোভ হয়েছে। স্পেন সরকার অধিকারকর্মীদের নিরাপত্তা এবং অধিকারের সুরক্ষার জন্য ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছে।

নৌবহর, সাংবিধানিক মূল্যবোধ এবং গাজার পক্ষে প্রতিবাদে শুক্রবার ইতালির শ্রমিক সংগঠনগুলো সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফ্লোটিলায় বাধা দেওয়াকে সন্ত্রাসবাদী কাজ বলে নিন্দা করেছে এবং এই আক্রমণের জন্য দায়ী অপরাধীদের জবাবদিহি করার আহ্বান জানিয়েছে। আইরিশ উপপ্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস নৌবহরে বাধা দেওয়ার খবরকে উদ্বেগজনক অভিহিত করে বলেছেন, তিনি আশা করেন ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে এমপি পুত্র জাহেদ চৌধুরী
পরবর্তী নিবন্ধপটিয়ায় বড় ভাইয়ের সাথে অভিমান করে ছোট ভাইয়ের আত্মহত্যা