দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে করে চকরিয়ার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে সংরক্ষিত বনভূমিতে শ্বশুরবাড়ির পাশে ঘর তৈরি করে স্ত্রীসহ বসবাস করে আসছিলেন মহেশখালীর জাহেদুল ইসলাম (২২)। গতকাল বুধবার সকালে উঠানের একটি গাছ থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মানিকনগর পাহাড়ি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে স্ত্রীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জানায় মরদেহের বিভিন্নস্থানে জখমের দাগ দেখা গেছে। স্বজনদের দাবি, জাহেদকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পিটিয়ে হত্যা করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে। নিহত জাহেদুল ইসলাম কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব পুঁইছড়া গ্রামের মোহাম্মদ ইউনুছের পুত্র।
নিহতের স্বজনরা জানান, প্রায় দুইবছর ধরে নিজের পৈতৃক ভিটা ছেড়ে শ্বশুরবাড়ির পাশে ঘর করে বসবাস করে আসছিল জাহেদ। প্রতিনিয়ত ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। এমনকি শ্বশুর-শাশুড়িসহ মেয়ের পরিবারের সদস্যরা শারীরিকভাবে নির্যাতনও চালাতো তার উপর। সর্বশেষ বুধবার ভোররাতে ব্যাপক পিটুনিতে প্রাণ হারায় জাহেদ। পরে বিষয়টিকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দিতে তার লাশ উঠানের একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে শ্বশুর বাড়ির লোকজন।
জাহেদের মা জান্নাত বেগম অভিযোগ করেছেন, তার ছেলেকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামের সোনা আলীর মেয়ে শাওরিন জন্নাত। তাদের সংসারে এক পুত্রসন্তানও রয়েছে। কিন্তু সে সংসারে সুখ ছিল না। প্রতিনিয়ত তার পুত্রকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল স্ত্রীসহ শ্বশুর-শাশুড়ি। কয়েকমাস আগেও নির্যাতনের খবর পেয়ে সেখানে যান তিনি। ভবিষ্যতে এই ঘটনা আর ঘটবে না আশ্বাসে তিনি ফিরে আসেন। সর্বশেষ বুধবার ভোররাতে একই ধরনের নির্যাতন ও ব্যাপক পিটুনিতে প্রাণ হারায় পুত্র জাহেদ। এই ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে থানায় মামলা রুজুর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
চকরিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার জানান, খবর পেয়ে সকালে লাশ উদ্ধার করতে গেলে বাড়ির উঠানের একটি গাছের সঙ্গে ঝুলতে দেখা যায় জাহেদকে। পরে লাশ নামিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এ সময় জাহেদের শরীরের বিভিন্নস্থানে জখমের দাগ পরিলক্ষিত হয়।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী দৈনিক আজাদীকে বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার এবং সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় জাহেদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা রুজু করা হবে। তবে ঘটনার পর থেকে সবাই পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।












