গাইবান্ধায় ভোট বন্ধের সিদ্ধান্তে সাবেকদের পাশে পেল ইসি

এনআইডি সরকারের হাতে যাক চান না সাবেক সিইসিরা

| বৃহস্পতিবার , ২০ অক্টোবর, ২০২২ at ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ

গাইবান্ধা-৫ আসনে উপ-নির্বাচন বন্ধের যে নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাতে সাবেকদের সমর্থন পাওয়ার কথা জানিয়েছেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, উনারা (সাবেক সিইসি ও ইসি) সকলেই একমত পোষণ করেন, আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়েছে; বলেছেন, এগিয়ে যান। গতকাল বুধবার সাবেক তিন সিইসি এবং ইসিসহ ১৪ জনের সঙ্গে মতবিনিময় সভার পর সাংবাদিকদের সামনে এসে একথা বলেন হাবিবুল আউয়াল। বুধবার তিন ঘণ্টার সেই বৈঠকের পর সিইসি যখন সাংবাদিকদের সামনে আসেন, তখন তার চোখে-মুখে ছিল স্বস্তির ছাপ। এদিকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছ থেকে সরকারের অধীনে যাক, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনাররা তা চান না বলে জানান সিইসি। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, গাইবান্ধায় আমরা যে অ্যাকশনটা নিয়েছি, উনারা বলেছেন এটা সঠিক হয়েছে। আইনগতভাবে ও সাংবিধানিকভাবে ঠিক হয়েছে। উনারা আমাদের মুরব্বিজন, গুরুজন হিসেবে পরামর্শ দিয়েছেন-সততার সাথে, সাহসিকতার সাথে আমাদের এগিয়ে যেতে বলেছেন।

১৯৯১ সালের নির্বাচনের সময় সিইসির দায়িত্বে থাকা বিচারপতি আব্দুর রউফ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের এই অধিকার আছে। তাদের চোখের সামনে ধরা পড়ছে- ভোট দিতে পারছে না, কারচুপি হচ্ছে। তারা নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা বলেছি, দরকার হলে বার বার বন্ধ করবেন। জাতিকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। দশম সংসদ নির্বাচনের সময় সিইসির দায়িত্বে থাকা কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক বডি। সংবিধান ও আইন মোতাবেক তারা কাজ করে যাবে- আমরা এই পরামর্শ দিয়েছি। সদ্য সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, গাইবান্ধা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার এই ক্ষমতা আছে।

বৈঠকে কমিশন নিজেদের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য না দিলেও গাইবান্ধা নির্বাচন বন্ধের সার্বিক বিষয়টি তুলে ধরা হয়। সিইসি বলেন, আজ আমাদের পক্ষ থেকে আমরা কোনো বক্তব্যই দিইনি; তাদেরকে শুনেছি। সার্বিক কথা হয়েছে। গাইবান্ধাতে যে একটা ঘটনা ঘটে গেল, আমাদের প্রয়োজন ছিল আরও এনলাইটেন্ড হওয়া; উনাদের তরফ থেকে কোনো গাইডেন্স আছে কিনা, কিভাবে মূল্যায়ন করেছেন অতটুকু জেনেছি।

বুধবারের সভায় গাইবান্ধা উপ নির্বাচন ছাড়াও জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা, ইভিএম ব্যবহার ও সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ এসেছে। এনআইডি সেবা ইসি থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে স্থানান্তরের বিরোধিতাও এসেছে। সিইসি বলেন, এনআইডিটা এখানেই থাকা প্রয়োজন-এক বাক্যে সবাই একথাটা বলেছেন। উনাদের যে নলেজ রয়েছে, আমার সেটা নেই। তিনি বলেন, ইভিএম নিয়েও পক্ষে-বিপক্ষে কথা হয়েছে। অধিকাংশই পক্ষে বলেছেন। এটা নিয়ে জনমনে একটা নেগেটিভ পারসেপশন রয়েছে-এ পারসেপশনটা দূর করতে হবে।

গাইবান্ধা-৫ আসনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপ-নির্বাচন শেষ করতে না পারায় সিইসির এখতিয়ারে পরবর্তী ৯০ দিনে তা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে এ নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বুধবার ইসির জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাজেকে গাড়ি উল্টে পর্যটক নিহত আহত ছয়
পরবর্তী নিবন্ধ২৯ প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো ঘোষণা করায় তথ্য পাওয়ার অধিকার বিঘ্নিত হয়েছে