ঈদ সামনে রেখে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার, গরুর চামড়ার দাম গতবারের চেয়ে ৭ টাকা এবং খাসির ক্ষেত্রে ৩ টাকা বেড়েছে। ট্যানারি ব্যবসায়ীদের এবার ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া কিনতে হবে ৪৭ থেকে ৫২ টাকায়, গত বছর এই দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম হবে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা, গতবছর যা ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা ছিল। এছাড়া সারা দেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা, আর বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
গতবছর খাসির চামড়ার দাম ছিল ১৫ থেকে ১৭ টাকা, আর বকরির চামড়া এবারের মত ১২ থেকে ১৪ টাকাই ছিল। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চামড়ার মূল্য নির্ধারণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় এ মূল্য নির্ধারণ করা হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে চামড়ার এই দাম ঘোষণা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বাংলাদেশে সারা বছর যে সংখ্যক পশু জবাই হয়, তার মোটামুটি অর্ধেক হয় এই কোরবানির মৌসুমে। কোরবানি যারা দেন, তাদের কাছ থেকে কাঁচা চামড়া কিনে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেন পাইকারদের কাছে।
পাইকাররা সেই চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণের প্রাথমিক কাজটি সেরে বিক্রি করেন ট্যানারিতে। ট্যানারি কেমন দামে চামড়া কিনবে, তা প্রতিবছর নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। পশু কোরবানির পর চামড়ায় লবণ দেওয়ার জন্য কোরবানিদাতা ও চামড়া ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে সংরক্ষণ এবং লবণ দেওয়ার বিষয়টি আমরা জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে চাচ্ছি। কোরবানিদাতা যেন লবণের বিষয়টিতে সচেতন হন। তারা নিজেরাই লবণ কিনে নিজেরাই লবণ দেবেন, অথবা এই চামড়াটা তারা যাদেরকে দেবেন, এতিমখানা বা অন্য কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অথবা মৌসুমি ব্যবসায়ী, তাদের সাথে সমন্বয় করে লবণ দেওয়াটা নিশ্চিত করবেন।
আমরা আশা করছি, এ বছর লবণযুক্ত চামড়া সংগ্রহ করতে সক্ষম হব। সেক্ষেত্রে আমাদের চামড়ার গুণমত মান বজায় থাকবে। আমরা আমাদের রপ্তানি আয়সহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে সক্ষম হব। ২০১৬ সালের পর থেকে চামড়ার দাম যে নিম্নমুখী, সে কথা তুলে ধরে সচিব বলেন, আমাদের হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি শিল্প স্থানান্তর হয়ে যায় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যায়, সবগুলোর একটা ভূমিকা ছিল। কিন্তু এ বছর আমরা প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার ক্ষেত্রে সাত টাকা বাড়িয়ে দিয়েছি। ছাগলের চামড়ার ক্ষেত্রে তিন টাকা বাড়িয়ে দিয়েছি। চামড়া এবং চামড়া জাতীয় পণ্য রপ্তানিতে এ বছর প্রবৃদ্ধি হয়েছে অনেক। এটা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আমরা কিন্তু ধারাবাহিকভাবে গরু এবং ছাগলের চামড়ার মূল্য বৃদ্ধি করতে সক্ষম হব।