গরিবদের অল্প ঋণ পরিশোধ না করতে পারলে কোমরে দড়ি পরানো হয়, আর বড় ঋণ খেলাপিদের ঠেকাতে ‘নানা চেষ্টা করা’ হয় বলে মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সোনালী ব্যাংকের এক খেলাপি ঋণের মামলার শুনানিতে গতকাল সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী নেতৃত্বাধীন তিন সদেস্যর আপিল বিভাগ এ মন্তব্য করে। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম। ঋণ খেলাপি নারায়ণগঞ্জের এক ব্যবসায়ীর আবেদনের শুনানির সময় তার আইনজীবী মোকছেদুল ইসলামের উদ্দেশে আদালতের এই মন্তব্য আসে। আদালতে সোনালী ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন শামীম খালেদ আহমেদ এবং ওই ব্যবসায়ীর পক্ষে ছিলেন মোকছেদুল ইসলাম। খবর বিডিনিউজের।
পরে শামীম খালেদ আহমেদ বলেন, ১৯৯৭ সালে ফজলুর রহমান অ্যান্ড কোং প্রতিষ্ঠানের নামে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল আঞ্চলিক শাখা থেকে ৩২ কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফজলুর রহমান মারা গেলে ঋণ আদায়ে অর্থঋণ আদালতে মামলা করে সোনালী ব্যাংক। পরে সুদসহ ঋণ পরিশোধের অংক বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় দেড়শ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ২৬ বছরে মাত্র পাঁচ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানান তাদের আইনজীবী। তাদের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, গরিব কৃষকরা ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিলে কোমরে দড়ি পরানো হয়, অথচ বড় বড় ঋণ খেলাপিদের ধরা যায় না। বড় খেলাপিরা ঋণ পরিশোধ না করতে শত শত কোটি টাকা খরচ করেন, ঋণ পরিশোধ প্রক্রিয়া ঠেকানোর জন্য বড় বড় আইনজীবী নিয়োগ করেন।
এই আইনজীবী আরও জানান, ঋণ পরিশোধ না করায় অর্থঋণ আদালত ওই ব্যবসায়ীকে টাকা পরিশোধ করতে বলে। অর্থঋণ আদালতের এই এখতিয়ার নেই দাবি করে ওই ব্যবসায়ীর পক্ষে মামলা থেকে অব্যাহতি চাওয়া হয়। শুনানি শেষে সর্বোচ্চ আদালত তা খারিজ করে দেয় এবং ঋণ পরিশোধের আদেশ দেয়।