গভীর রাতে রাউজান পৌর এলাকা সুলতানপুর কাজী পাড়ায় একদল দুর্বৃত্ত বাড়ি থেকে বের করে এনে দৌড়িয়ে দৌড়িয়ে এক নারীকে কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে মেরে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। জায়গার বিরোধের জের ধরে এই হামলার ঘটনায় আহত নারীর নাম তাহেরা আকতার (৩৮)। তিনি ওই গ্রামের ব্যবসায়ী আবদুল হাকিমের স্ত্রী।
হামলার সময় ধারণ করা এক ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, দুর্বৃত্তরা ওই নারীকে বাড়ি থেকে বের করে এনে এলোপাতাড়ি লাঠিপেটাসহ কিরিচ দিয়ে কোপাচ্ছে। এসময় ওই নারী দুর্বৃত্তদের হাত থেকে বাঁচতে দৌড়াচ্ছেন। তার পেছনে মা মা কান্না করে দৌড়ছে তারই ছোট শিশু কন্যা। বড় কন্যা টর্চের আলো ফেলে মোবাইলে এই ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণ করেন। রাউজান পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সংঘটিত এই ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতের।
স্থানীয় জনসাধারণ সূত্রে জানা যায়, মঈনুদ্দীন ছরোয়ার নামের এক প্রতিবেশীর সাথে তাহেরা আকতারের স্বামী আবদুল হাকিমের জমির দাবি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। আগে থেকে বিরোধীয় জায়গা নিয়ে দায়ের করা একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন আছে। বর্তমানে ওই জায়গার উপর স্থিতবস্থা বজায় রাখার বিষয়ে আদালতের নির্দেশনাও রয়েছে।
আহত নারীর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, প্রতিপক্ষ আদালতের দেয়া স্থিতবস্থা ভঙ্গ করে বিরোধীয় জায়গায় পাকা ভবনের কাজ শুরু করলে আমরা প্রতিবাদ জানাই। এতে তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে গভীর রাতে এই হামলা চালিয়েছে। আক্রমণকারীরা তাদের ঘর থেকে ১ লাখ ৩ হাজার টাকা, আক্রান্ত নারীর স্বর্ণের কানের দুল ও চেইন নিয়ে গেছে।
আহত নারীর কলেজ পড়ুয়া মেয়ে সানজিদা আকতার বলেন, তার মাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ফোনে কথা হলে আক্রান্ত তাহেরা আকতার বলেন, সন্ত্রাসীরা তার স্বামীকে হত্যার উদ্দেশে গভীর রাতে বাড়িতে এসেছিল। তাকে পেয়ে তার উপর হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, হামলায় সরাসরি জড়িত ছিল তার প্রতিপক্ষ মঈনুদ্দীন ছরওয়ারের ভাতিজা সুমন মুন্সী। অপর একজন মাসুম। তিনি এই দুইজনকে চিনলেও হামলায় আরও ১৫–২০ জন অংশ নেয় বলে জানান।
ঘটনা বিষয়ে জানতে চাইলে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সংবাদ পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। ভিকটিমের পক্ষ থেকে থানায় মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত সুমন মুন্সিকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। জড়িত অন্যদেরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।